এ বছরের মতো চলে, নাহ, আসার আগে (যাই বলতে নেই, আসি বলতে হয়; গুরুজনেদের শিক্ষামাফিক, কিন্তু, কেন ওমনতর বলতে হয়, তার ব্যাখ্যা, হাজার প্রশ্নেও মেলেনি), বোধহয়, মায়েরই করুণায়, একটা নয়, দু - দুটো নতুন গান পেলাম। হয়তঃ আপনাদের অনেকেরই শোনা, তবু্ও, শেয়ারেব্ল মনে হওয়ায় আপনাদের সামনে, হাম্ব্লি প্লেস করছি –
# প্রথম গানঃ
এত গয়না বেটি কোথায় পেলি?
সিংহীর উপর ধিঙ্গী হয়ে
বাপের বাড়ি চলে এলি !
অবস্থা তোর আছে জানা,
ভাতের উপর নুন জোটেনা
তবে এত বড়াই কেন
পরে বেনারসী শাড়ি?
শিব থাকে শ্মশান ঘাটে,
বুঝি ত্রিশূল দিয়ে সিঁদ কাটে
ভক্তের সঞ্চিত ধন
তাই পরে বাহবা নিলি?
ছেলে দু’টোর নড়া ধরে,
এনেছিস মা কেমন করে !
এরা কি তোর সতীনপো মা
কোন গেঞ্জি দু’টো কিনে দিলি?
গয়নার আসল নকল যায় না চেনা
বোধ হয় ওসব কেমিক্যালই !
# দ্বিতীয় গানঃ
শ্যামা মা কি আমার কালোরে
শ্যামা মা কি আমার কালো।
লোকে বলে কালি কালো
আমার মন তো বলেনা কালোরে।
(কালো রূপে দিগম্বরী)
হৃদিপদ্ম করে মোর আলোরে
শ্যামা মা কি আমার কালো।
শ্যামা (কখনো শ্বেত কখনো পিত
কখনো নীল ও লোহিতরে)
মায়ের (সে ভাব কেমন বুঝিতে না পারি)
ভাবিতে জনম গেলোরে
শ্যামা মা কি আমার কালো।
শ্যামা (কখনো পুরুষ কখনো প্রকৃতি
কখনো সুনাকার হে
মায়ের (সে ভাব ভাবিয়া কমলাকান্ত)
সহজে পাগল হলোরে
শ্যামা মা কি আমার কালো।
(কালো রূপে দিগম্বরী)
হৃদিপদ্ম করে মোর আলোরে
শ্যামা মা কি আমার কালোরে
শ্যামা মা কি আমার কালো।
# তিন নম্বর গানঃ
আর কাঙাল হয়ে থাকতে নারি,
দে মা আমায় রাজা করি।
দন্ত অন্ত হলো গো মা,
কেমনে চিবোই কলাই মুড়ি
(এখন) হালুয়া ভিন্ন দিন চলে না
বরং রাবড়ি হলে খেতে পারি।
পেটের জ্বালায় ভিক্ষা মেগে,
ফিরি লোকের বাড়ি বাড়ি
চরণ যে মা আর চলে না
বিনা একখান মোটরগাড়ি।
রাজাই যদি করিস মাগো
দিস না যেন জমিদারি
খাজনা আদায় বিষম ল্যাটা
কেমনে দিব কালেকটারি।
পাওনাদারে পাওনাদারে,
(আমার) আছে যে দুনিয়াভরি
আমায় রাজা করার আগে
পাঠাস তাদের যমের বাড়ি।
খালি পেটে বাতাস ঢুকে,
কেবল ফুলে যাচ্ছে ভুড়ি
টাকা দিতে আ -কার ভুলে,
টাক দিলি মা কপাল জুড়ি।
শিল্পীঃ শ্রী রামকুমার চট্টোপাধ্যায়।
ফুটনোটের মতন একটা ভাবনাও আপনাদের সঙ্গে, আসুন, ভাগ করে নিই; - বোধহয় একমাত্র বাঙালীরাই পারে এমনতর গান লিখতে তথা গাইতে তথা শুনতে। যাকে তারা মগজপণ ভক্তি করে, সুবিধাজনক অবস্থা পেলেই, তাকেও লেগপুল করতেও ছাড়ে না। এতে করে একটা জিনিসই, আমার তুচ্ছ ভাবনায় এসে লটকে পড়ে, সেটা হলো, এই ভক্তি, আবার তার সঙ্গে লেগপুল, সাইমুলটেনিয়াস্লি, করতে করতে নশ্বর, ঈশ্বরের আরো কাছাকাছি আসে।
ওপরে দু-দুটো গান বললুম অথচ লিখলুম তিনটে; কেন? – মাঝখানের গানটা বহুশ্রুত, যার মধ্যে আমিও পড়ি; তবুও এখানে এক্সেশন করলুম, আমরা তো পড়া বই আবারও পড়ি, পড়ি না কিনা? এনিওয়ে, খেয়াল করেছেন কি এই দ্বিতীয় গানটা শ্রী কমলাকান্ত চক্রউপাধ্যায়ের লেখা? যিনি, আমার সীমিত এবং দৈনতাভরা মননে, বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ গীতিকার এবং অন্যতম জটিলতম গীতিকারও বটে।
ভাগ্যিস AI এখনো সবটা বুঝতে শেখেনি; উপর্যুপরি ফাজিলজি ইম্পার্ট করা সত্ত্বেও; এ ব্লগ ব্যাটা এখনো ইন্ডেন্ট তেমন করায়ত্ত করতে পারেনি (বলছি বটে, কিন্তু এমনও তো হতে পারে যে, ইন্ডেন্ট সিলেকশন নিজের ইচ্ছেমতো করাই যায়; ল্যাঠাটা হলো, আমিই জানি না...); আমি কিন্তু গানগুলোর লাইন-স্পেসিং সিঙ্গলই রেখেছিলাম কিন্তু এ একটা কমন এবং ডেফিনিট অর্থাৎ প্রিডিফাইন্ড লাইন-স্পেসিং মেন্টেইন করে বলেই অ্যাপারেন্টলি মনে হচ্ছে। তবে, এখানে, ‘হয়তঃ’ এই প্রিফিক্সটা জুড়ে দিলাম।
২০২২ সনের অর্থাৎ ১৪২৯ বঙ্গাব্দের শুভ বিজয়া দশমীর শুভকামনা আর ভালোবাসা জানবেন।
No comments:
Post a Comment