Monday, February 26, 2024

অথ অথঃ মশানী বৃত্তান্ত

 

...সেই শব্দটা বোধহয় মশানীবধ্যভূমি অর্থাৎ মশান হইতে উৎপত্তি যাহারমানে, যে যেখানে হন্তব্য, তার পুটকি সেইখানেই মারা হবেঅম্রুবা দৈত্যের বড়ো বাড় বেড়েছিলো; তাকে, তার পোঙায় আল্টিমেট হুড়ো দেওয়ার জায়গাতে, যথাকালে, যথাপাত্রী, যথাবিহিত পন্থাপুরঃসর হুড়ো দিলেনসেই থেকেই শ্মশান-মশান

 

মানুষ দুকারণে জন্মায়; - এক, তার আগের জন্মের পুণ্য কাজের যেটুকু বাকী থেকে গেছে, সেটুকু পূর্ণ করার জন্য, আর, দুই, আগের জন্মে, বহোতসা গুণাহ্করলে, তার নিজেরই জন্য বরাদ্দ বাঁশটা, ঝাড় থেকে চিনে বুঝে, টেনে বা আছোলা কেটে এনে, আপন গাঁড়ে দেবে বলেদ্বিতীয় ক্ষেত্রে, এটাই নিয়তি; প্রথম ক্ষেত্রে, যেটা ছিলো কর্তব্যপ্রসঙ্গতঃ আগের জন্ম যে মনুষ্য যোনিতেই হয়েছে, এমন কথা যে অনিবার্য, তা নয়; যে যোনিতেই জন্মাক, সেই জীবত্বের সাধারণ ধর্ম থেকে চ্যুত হলেই, হ্যাঁ, অবশ্যই সে চুতমারানি, ফলতঃ, পরের জন্মে, ওই, সেই, বাঁশ কেন ঝাড়ে... কেস

 

প্রথমের কাজ সম্পূর্ণ হলে সমাদর, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে গাঁটওয়ালা বাঁশ গুহ্যদ্বারে পুরোপুরি ঢুকে গেলে, ওপরে গিয়ে তামাচা-লাথ খাওয়ার ওয়ক্ত

 

শ্মশান কালী ছাগবাহিনী হলে তাঁকে মশানী নামে অভিহিত করা হয়সত্যযুগে অম্রুবা দৈত্যকে বধার্থে (এক্কেবারে মহিষাসুর আখ্যানের আইডেন্টিক্যল, তবে ওখানে ব্রহ্মা, আর এখানে শিবের বর) ব্লা ব্লা ব্লা... মা দুগ্গা, মশানীবেশে, মালটাকে নামিয়ে দিয়েছিলেনএবং তারপর সন্তানে দিতে কোল, ছাড়ি সুখ কৈলাস, বরাভয় রূপে মা শ্মশানে করেন বাস হয়ে রয়ে গেলেনমানসপুত্র বিনায়ক, গণপতিও বটেন, একটা করে গণকে দ্যেপিউত করে দিলেন মাকে সময়ে অসময়ে চা-কফি এনে দেওয়ার জন্যমা মদ খেতে চাইলেই বাওয়ালি বাঁধা, গেঁয়ো শ্মশানের ধারেকাছ ধেনো বা হাঁড়িয়া, বড়োজোর পচাই ছাড়া কিইবা আর পাওয়া যাবেবেচারা মঙ্গলমূর্তি... তিনি জানেনই না যে, তাঁর মা, ঠিক তাঁর বাপেরই মতো; ভক্তের নৈবেদ্য, ভালোবাসা আর আন্তরিকতা থাকলে, সেটাই তাঁদের কাছে অমৃতসম

 

আহমেদাবাদে মশানী দেবীর মন্দির আছে (মরতে ওখানে কেন যে হতে গেলো! আহমেদাবাদের আউটস্কার্টগুলোতে মুরগী / পাঁঠা রান্না করতে গেলে নাকি ঊনপঞ্চাশদিকে ধুনো, ধূপ, রুম ফ্রেশনার ইত্যাদি ব্যবহার করতে হয়না ভূত নয়, আমিষ আহারের পদ রন্ধনস্থ আছে বলে)।

 

তবে লোকগাথাব্যাদে এই দেবীর উল্লেখ বোধহয়, আমার ভীষণ সীমিত জ্ঞানানুযায়ী, নেইলোকগাথা যদি নাগরিক উপকথার সঙ্গে অভেদ হয়ে যায়, তবে সে লোকগাথার মূল্য প্রায় নেই বললেই চলে, কেননা সেটা ম্যানিপুলেটেডসেখানে ক্ষমতা তার ডানা-পাখনা মেলেছে, মেলে উঠতে পেরেছে, সেটার আবহ, চরিত্র এবং তাদের গুণাবলী পর্যন্ত ম্যান্যেউভ্যরড বেশীর ভাগই গেঁয়ো পটভূমিতে আরবান টেক্সটমানে, শহুরেপন স্পেশ্যাল এফেক্ট দিয়ে থাকেসোজা কথায়, মালটি, আরবেনএখানেও তাই

 

আগ্রহী জন একটা সাঁওতালি লোকগাথা তল্লাশ করে দেখতে পারেন, অনেকেই হয়তঃ জানেনও, কারণ ওটা কোডেড; - যেখানে চন্ডী হলেন মহিষাসুরের বোনগেঁজেল, অকর্মণ্য শিবঠাকুর তাঁর ভগিনীপতি; আর মোস্ট ইন্টারেস্টিং যেটা, সেটা হলো, দূর্গা অসামান্যা সর্ব-রস-পটীয়সী বারাঙ্গনাএই রসের মধ্যে বীরাচারও আছেঅর্থাৎ দূর্গা বারাঙ্গনা হলেও সর্বগুণের আধার

 

মহিষাসুরের ছ্যাঁচড়ামি এবং ইতরামি; তাঁকে কিন্তু হিরো হিসেবেই দেখানো হয়েছে, এমন হিরো যাঁর বিস্তর দোষও আছে, তবে, ইয়ে, খুব একটা মাগীবাজ ছিলেন না তিনি 

 

তো, বুর্জোয়া দেবতারা, মার্ক্স, ইয়ে, সরি, মহিষাসুরের তাড়নে অল্মোস্ট সাডেন্লি, প্রোলেতারিয়েত বনে গিয়ে, দূর্গার সাহায্য চাইলে পর, তিনি, মাঠে নেমেই, স্ট্রিপ দেখেই, বুঝে নিলেন বল (বলস?) নড়বে কিনা; সেইমতো, প্রথমে শিবঠাকুরকে, আমি রূপেই (এবং আনুষঙ্গিকে) তোমায় ভোলাবো করে দিয়ে, পুরো সেভেনের স্টাইলে, স্যাটাস্যাট্মহিষাসুরের পুরো ডিটেইল্স্ কন্গ্লোম্যারেট করে নিয়ে, শাড়ীটাকে গাছকোমর করে বেঁধে... আর কি, এক ছোবলে ছবি করে দিলেনঅউর কেয়া?

 

এর পরে অবশ্য একটা চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে; তখন মহিষাসুর ফুস হয়ে গেছে, চন্ডী সমস্ত ব্যাপার জানতে পেরে, খচে গিয়ে, এবং শিবঠাকুরের সঙ্গে দূর্গার শারীরিক-মানসিক ইন্টুপিন্টু আগে হয়েছিলো, ছিলো হয়তঃ তখনো, জেনে এবং এঁচে, আরও অনেক-অনেক বেশী, মানে, বিত্তাল খচে গিয়ে, শিব ঠাকুরকে এমন বেধড়ক্কা ক্যালালেন, যে, অশ্বিন কুমার ভাতৃদ্বয়কে, তাক থেকে ধুলো পড়া গ্রে' অ্যানাটমি এবং আর যা যা প্রাথমিক পড়ার, মানে, নামকরা স্পেশ্যালিষ্ট ডাক্তাররা, ডি এম ডিগ্রী লাভের পর, যেভাবে নাড়ী দেখার পদ্ধতি বেমালুম ভুলে যান, ওসব প্রিল্যিম ব্যাপার মনে থাকলে স্পেশ্যালিষ্টের স্টেট্যাস থাকবে নাকি; সেগুলো পর্যন্ত পড়ে, হাতে ধুলো, ঝুল মেখে; মর্ত্যলোকের আয়ুর্বেদিকদের সঙ্গে কনসাল্ট করে, নেট-ফেট সার্ফ করে (ওঁরা ফেট, মানে, নিয়তিও সার্ফ এক্সেলে ধুয়ে নিতে জানেন, শাল্লা, সাধে ধন্বন্তরি বলে তাঁদেরকে) চিকিৎসা করতে হলো

 

চন্ডী দূর্গাকেও রাম প্যাঁদানি দিলেনকিন্তু দূর্গা বীর, ক্ষাত্র ধর্মটাইপের কিছু তাঁর ছিলো বলে, ক্ষত-বিক্ষত অবস্থাতেও ডজ-ড্রিবল করে পালিয়ে গেলেন...

 

এইটা একটা সার্টেন এক্সটেন্ট অবধি ক্রুড লোকগাথা

 

 

...তবে, যাওয়ার আগে, হ্যাঁ, যাওয়ার আগে, বলে নিইঃ আমি হাফ-গেরস্ত' মতো হাফ-শ্মশানচারী হয়েও (এখন সেসব সুগুণাবলী আর নেই) ওসব মশানী থিওরিতে নেইকোনোদিন ছিলামও না

 

আমার শ্মশানে জাগিছে শ্যামা (তারা) মা...

...কারণ, হ্যাঁ, সেখানেই অনন্ত জাগে

 

কি- বা পাঙ্কচুয়েশন মার্ক দিতে পারি মর্টাল আমি ওই জাগে পর? ওখানেই সব শুরু, ওখানেই সব শেষ, তারপর অরব, নিরাকার অনাদি, আদত অন্ধকারে, বলা ভালো, সেই শাশ্বত অন্ধকারে, মিয়্যার নশ্বর আমি, আমার অস্তিত্বের অহংকারে গেয়ে উঠি সাউন্ড অফ্সাইলেন্সঃ হেলো ডার্কনেস, মাই ওল্ড ফ্রেন্ড, আই কাম টু টক উইদ এগেইন্‌...

 

 

অনিন্দ্য ঘোষ ©

 

ছবিঃ সবকিছুর ছবি পেতেই হবে?! আশ্চর্য মাইরি, একটু কল্পনা করে নিন্‌ না!

 

ঋণঃ আমি সজ্ঞানে বা অজান্তেই একপ্রকার, আমার বাক্যের শুরু, মাঝখান বা শেষে, বহু গায়ক / গায়িকার গানের অংশ, অনেকসময় কবিতার কোনো অংশ, কারোর গদ্যের কোনো অংশ, নামকরণ ইত্যাদি প্রভৃতি ব্যবহার করে ফেলিএখানেও যদি করে থাকি, তো, সেইসব কবিদের, গদ্যকারদের আর গানের ক্ষেত্রে, গানের গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক / গায়িকা ও সেইসব গানের অংশভুক সকলকে