স্নান করতে করতে বা ওয়াশরুমে বসে, এই মরপৃথিবীর তামাম গভীরতম চিন্তা ভাবনা আমার এমনতরই ব্যসন যে, সেটা, আমাকে চেনার একটা ইন্ডিকেটর হতে পারে; অর্থাৎ যাকে বলা যেতে পারে, আমার আইডেনটিটি সিম্বল। কোন্ অনিন্দ্য? ওহ, যে পায়খানায় বা চানে গেলে, ঘন্টাখানেকের আগে বেরোয় না, সে? ওই তো, সামনের দুটো বাড়ী ফেলে, পরের দোতলা বাড়ীটা।
হ্যাঁ, কিছুদিন যাবৎ আমার মনে হচ্ছিলো যে, কমোডের সবুজ, হাল্কা সবুজ প্লাষ্টিকে কালো কালো দু – তিনটে ছোপ পড়েছে; কিসের তা জানি না, কিন্তু, পড়ে তো, আফটার অল, ছে। অতএব ওটাকে, নাহ, সংস্কার নয়, পরিষ্কার করা দরকার। তাছাড়াও কমোডটা দীর্ঘদিন পরিষ্কারও করা হয়নি; - এই সব নানাবিধ ভাবনায় দিন কেটে যাচ্ছিলো। আমার।
সেদিন বাথরুমে, শাওয়ার খুলে স্নান করে যাচ্ছি তো, যাকে বলে, যাচ্ছিই। এমনিতেই আমাদের বাড়ীতে জলের একটু স্কারসিটি আছে, ফাঙ্কশানাল ট্যাপ কানেকশন বেশ কিছুটা দূর থেকে আসে। তো, একটা অদ্ভূতেড়ে, উদ্ভট ভাবনা মনে এলো; - সরকার, মানে, এই বিজেপি সরকার, আমাদের সবকটা পর্ণসাইট বন্ধ করে দিয়েছে। একদম। যাকে বলা উচিত, লক্ অ্যান্ড কি। এতে করে কার কি লাভ হচ্ছে জানি না, কিন্তু, এটা জানি, অনেকের অসুবিধা হচ্ছে; এই নতূন অবস্থায় নিজেকে ফিট ইন করাতে। আমি জাত, ধর্ম ইত্যাদি প্রসঙ্গ উঠলেই ফ্যাক করে হেসে ফেলি, ইন ফ্যাক্ট, ফ্যাকফেকিয়ে হাসি (এর একটা ভারী সুন্দর ইংরেজি শব্দ আছে, যার প্রথম বাংলাটা হচ্ছে ফিচেল হাসি, সব মনে পড়ছে, শুধু ওই শুয়োরের বাচ্চা শব্দটাকে ছাড়া), কিন্তু এটা জানি যে, থাকার হলে, ওই ধর্ম আর জাতের কথা বলছি, শুধু, মেয়ে জাত আর পুরুষ জাত কিংবা পুরুষ ধর্ম আর স্ত্রী ধর্ম। এই। এবাদে, আর অন্য কিছু, জাস্ট, নেই।
সে না হয় হলো, কিন্তু, এই যে এই পর্ণসাইটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলো, আমার ব্রেনানুযায়ী (যদিও ওটা আমার হাঁটুর ধারে-কাছে আছে বলেই ধারণা, কার আবার? – আমার !), এতে কিন্তু সমাজের একটা বড়ো অংশের ক্ষতি হলো। সেই ক্ষতিটা চরম কিনা সেটা আপনিই বলবেন, ততক্ষণ আমি লিখে যাই; - ধরুন, একটি ছেলে হাইয়ার সেকেন্ড্যরী পাশ দিয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে, চাকরীর পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এটাই তো সচরাচর আমরা দেখে থাকি, হ্যায় কি নেহী? তা নিচ্ছে তো নিচ্ছেই, ওই অনেকটা আমার বাথরুমে, শাওয়ার খুলে স্নান করার মতো, আশ আর মেটে না, তেমনতরই, তার ভাগ্যে চাকরির শিকে আর ছেঁড়ে না। ভালো কথা, আমাদের গল্পের সেই ছেলেটা চাকরী পরীক্ষার জন্য রাইস (ফ্রায়েড নয়, আমার মতো উদরসম্বল হবেন না, প্লীজ) জাতীয় কোনো ইনষ্টিটিউটে ভর্তিও হয়েছে; মানে, বাপ তার খামতি রাখছে না কোথাও; ... একদিন রাত্তিরের দিকে, ছেলেটা বেশ মন দিয়েই পড়ছিলো, কিন্তু, হঠাৎ, তার, যৌনাকাঙ্ক্ষা জেগে উঠলো, মানে, হর্নি হয়ে পড়লো আর কি। যাঁদের হর্নি শব্দটায় আপত্তি আছে, তাঁরা অ্যারাউজড্ ধরে নিতে, অবশ্যই পারেন। কেনকি, আমি, এখন, অন্য কথা বলবার তালে আছি; তা হর্নি বা অ্যারাউজড্, যে যাতে খুশী, হয়ে তো পড়লো, এবার? এবার আর কি? – একটা ইন্ডেসপেন্সেবল্ মাষ্টার্বেশন। প্রশ্নটা হলো সেটা হবে কিভাবে? ছেলেটা তো আর অঙ্কের এম সি কিউ এর বইটার কথা ভেবে মাষ্টার্বেট করতে পারবে না, রে বাবা। – কি পারবে? করতে? মাষ্টার্বেট? করতে পারলে তা, সে মহাপুরুষ, তার খুরে (এ কি কথা? যখন কিনা মহাপুরুষ, তখন কিনা খুর; না হয় বিজেপি জমানা, তা বলে, এভাবে গোমাতাকে কন্সেপচ্যুয়ালাইজ করা আদৌ কি সম্ভব? হ্যাঁ, এইটুকু মিয়্যার সাবলিমেশনও টলারেন্স লেভেলের বাইরে !) দণ্ডবৎ, তখন তার কল্পনায় একটা নারী শরীর চাই, ফিকে হলেও, আবছা একটা নারী আদল। তার। চাই। সেইসব নীবিবন্ধ, সরি মাসিক বন্ধ, সরি, সরি, এক্সট্রিম্লি সরি, সেই অর্গলবন্ধ দিনগুলো, যখন কিনা, মোটা পাতার রঙীন কাগজে আসতো, পর্ণের নানারকম পোজ; ‘সেসব দিন তো কবেই বিগত’, আর এসব ক্ষেত্রে, ‘যে যায়, সে যায়,’ মানে, আর ফেরে না। যেমন, এখন ফোর কে-র জমানা চলছে, এখন কি সম্ভব পোঙায় বাল্ব জ্বলা টেলিভিশন আবার ফিরিয়ে আনা?
আমাদের গল্পের সেই ছেলেটা তখন কি করবে? কিংকর্তব্যবিমূঢ় থাকতে থাকতে, পাশের কাউকে জিজ্ঞেস করে ফেলবেঃ দাদা, তাহলে কি ভেবে মাষ্টার্বেটটা করি, বলুন তো? যদি করে, তাহলে, ‘কি কি হয়, কি কি হতে পারে, সেসব তো আজ সবাই জানেন’; কুল, জাস্ট ক্যাল খেয়ে ড়-ঢ় হয়ে পড়ে থাকবে, আর, তার পাশে বসে থাকবে তার তামাম যৌনাকাঙ্ক্ষা।
সে কিন্তু তার পয়েন্টে সঠিক, শুধু তাই নয়, খুবই সঠিক। তার এই হর্নি বা অ্যারাউজড্ হওয়া সঠিক, তার এই মাষ্টার্বেশনোদ্যোগ সঠিক; বরং কাঠগড়ায় তো সে বা তারা উঠবে, যে বা যারা, তার এই প্রক্রিয়ায় বাধ সেধে আসছে, সাধছে, বা সাধবে। একটা দশ, বারো কি বড়জোর পনেরো মিনিটের মামলা, যেটা সেরে সে ফিরতে পারতো তার পড়াশোনায়, অর্থাৎ সাধনায়। তার জায়গায় শুধু, এক্কেবারেই অকারণ, একটা ছিকলি তুলে দেওয়া হলো।
…কিন্তু জৈবিক খিদে । সেকি যাবার? অ্যাতো সহজে? মোটেও না। অতঃপর সে অবগাহন শুরু করবে। কোথায়? কোথায় আর, সেই বাল্যভাঙনের ছোটবেলায় সে তো দেখেছে মাকে, নিজের মাকে, পোশাক ছাড়তে; কিংবা দেখেছে বোনকে, নিজের বোনকে, বিস্রস্ত স্নানরতা অবস্থায়, আচম্বিতে। সে, কি, অতঃকিম, সেদিকেই, মুভ করবে না?
এবং যদি করে, তাহলে, এ দায় কার? একজন না একজনকে তো এর দায় নিতেই হবে; এক্ষেত্রে, কে নেবে? সেই দায়?
যদি কেউ প্রশ্ন করেনঃ আহা, এসব যৌনচেতনা – ফেতনা কেন আবার? কেন এসব আবিল, ক্লিন্ন, কদর্য, কদাকার প্রসঙ্গ? তাঁকে কি বলার আছে? - নাহ, কোনোও খিস্তি নয়; বরং একটাই বাক্য, হেসে বলার, যে, ওইসব যৌনচেতনা – ফেতনা আপনার বাবা-মা’র ছিলো বলেই আপনি মালটার অস্তিত্ব। তারপর একটা হাসি, যে’রম হাসি হেসে উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেনের কাছ থেকে, সিনেমায়, চরিত্রানুনগ হয়ে সাময়িক বিদায় নিতেন, ঠিক সের’ম একটা হাসি।
এবার কেউ বলবেন, যে, আচ্ছা ভাই, অ্যাতো হ্যাজ যে নামালে, মেয়েরা বুঝি ধোয়া তুলসীপাতা? তাঁকেও হেসে এটাই বলার, যে, অবশ্যই নয়, কিন্তু, সেটা, কোনো মেয়েই বলবেন; আমার জন্মগত, জাতিগত, গোত্রগত, ধর্মগত বাধা আছে। তাতে করেও তিনি যদি এঁড়ে তক্কো চালান, তো, সেই একই হাসি বজায় রেখে, তাঁকে বলে দিতে হবে, যে, মেয়েদের সেক্সুয়্যাল আর্জ থেকে শুরু করে গ্র্যাটিফিকেশনের গ্রাফ, পুরোটাই, ছেলেদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, যদিও, মেয়েদের অর্গ্যাজমের ধারণার বয়স খুব বেশীদিনের, এমনতরটা নয়।
ওদিক থেকে তখন, নাহ, আওয়াজ নয়, ধমকানি ভেসে আসছে, কানেঃ বাবি / অনিন্দ্য, এটা কিন্তু বিকেলের জল, বেরিয়ে আয় বলছি, রাতটা কি করে কাটাবি ভেবেছিস কি? মা আর বউ, দুজনে মিলে অ্যায়সা চিল্লোনো চিলোচ্ছে, যে, কান পাতা দায় হয়ে যাচ্ছে। আমার।
ভেবেছিলাম, একটা পুরুষাঙ্গ এবং একটা স্ত্রী-চিহ্নের ছবি, একটা ডিল্ডোর ছবি, লেখাটার সঙ্গে দেবো, এখন ভাবছি, প্রথমবারের মতো ছেড়ে দেওয়া যাক, ছোটদের খেলায়, যেমন, দুধে-ভাতে থাকে। আসুন, ছেলেরা, সবাই মিলে, কালেক্টিভলি বলিঃ মনে রাখিস, এবারকার মতো ছেড়ে দিলাম, পরে যদি আবার দেখি না...
অনিন্দ্য ঘোষ ©
ফটোকার্টসিঃ গুগল ইমেজেস।
ঋণঃ আমি সজ্ঞানে বা অজান্তেই একপ্রকার, আমার বাক্যের শুরু, মাঝখান বা শেষে, বহু গায়ক / গায়িকার গানের অংশ, অনেকসময় কবিতার কোনো অংশ, ব্যবহার করে ফেলি। এখানেও যদি করে থাকি, তো, সেইসব কবিদের, আর গানের ক্ষেত্রে, গানের গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক / গায়িকা ও সেইসব গানের অংশভুক সকলকে।
No comments:
Post a Comment