Tuesday, March 14, 2023

"একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর..."

 

 

.

শিব ঠাকুরের মূল মন্ত্র লেখার সময় না থাকলে / পাত্তা না দিলে -

আজ মরলে কাল দুদিন, সময় থেমে থাকবে না

'রকম একটা পেজ-বাণী সাতসকালে, আমার টাইমলাইনে এলোএলো তো এলো, কিই বা ছেঁড়া গেলো; জন্মদাতা বাবা চলে যাওয়ার পর, আমি, শিব ঠাকুরকেই আমি বাবা ডাকি, সাড়া যদিও মেলে না; কিন্তু তাই বলে কাঁচা ইট পোড়ালে যদি শক্ত হয় তাহলে দুর্গাপুরের দুটো সাদা বেড়াল তিনটে নেংটি ধরবে না কেন? এর মতন যুক্তিহীন ভয় চুদিয়ে ভক্তি জন্মাবার ইচ্ছা দেখলে, প্রথমে আমার ঝাঁট জ্বলে, পরে হাসি পায়। 

 

একবার বড়োমা বলে ডাক, দেখি, দুনিয়ার কার সাধ্যি তোর খারাপ / অনিষ্ট করে; কোটেশন দিচ্ছি না, কারণ মিসকোট হবে; তবে এইগোছের, আর এটা যদি বা সয়ে নেওয়া যায়, প্রথমটা জাষ্ট... আর দ্বিতীয়তে, তারা মায়ের একটা ছবি; ওপরে মনের ভাব-ভক্তির কথা, আর সেখানে, ক্লাস ফাইভের বাচ্চাও ভুল করবে না, এমনসব বানানে ভুল দেখে, তারামাও লজ্জায় জিভটা একটু বেশী করে কাটবে; দেখা দেওয়া দূর অস্তকারণ দেখা দিলেই, বানান ভ্রমের চোটে, তারা মা, নিজেকেই, তাঁরা মা বলে ভাবতে শুরু করবে। 

 

পার্থিব জ্ঞান বলতে বাল, ব্রহ্মজ্ঞান মারাতে যাচ্ছেএকেই বোধহয় বলেঃ "পোঁদ মারবার তেল নেই, বেগুনভাজা খাওয়ার শখ।"

 

বায় দ্য ওয়ে, যাঁরা আমায় একটু চেনেন, তাঁরা জানেন, তারা মা আমার কাছে কি

 

শুধু হিন্দুমতে নয়, খ্রিস্টানরা যীশুর ছবি লাগিয়ে, আমেন লিখতে বলা হচ্ছে, বদলে নাকি, হাগার পর যীশু এসে ছুঁচিয়ে, টিস্যু পেপার দিয়ে মুছিয়ে দিয়ে যাবেনঅর্থাৎ সুখের ওপর শতরঞ্চি, তার ওপর ডবল বেঞ্চি

 

যদি খুব ভুল না করি, যীশু মার্কা বিজ্ঞাপনটা ফিলিপাইন্স থেকে আসছে, ভাষার বানানবিধি দেখে তাকালগই মনে হলো,

- মাহাল কিতা। (তোকে ভালোবাসি)

- কিতা মাহাল, মাকুলিত। (আমিও বাসি রে, বাঁদর কোথাকার)

 

আমি প্রতুত্তরে একবার লিখেছিলামঃ ফাক অফ, টোয়্যাট ফেসড জাইভ অ্যাস বাস্টার্ডতারপরে মেসেঞ্জারে এলোঃ Today will be one of the best days in your life because the blessing of God will come to you-the salvation of the second coming of the Lord Jesus. Are you ready to accept it? (কৃতজ্ঞতাঃ গুগল ট্রান্সলেট্যর, মেশিন ট্রান্সলেশনে অর্থাৎ অপটিক্যাল ক্যারেকট্যর রিকগনিশনে কোথাও ভুলচুক হলে, সেটা বুঝতে, আমি অপারগ)

 

অর্থাৎ, সেই যাকে, আমরা এতদিন অভাব বলে জেনে এসেছি, সেটা পুরোমাত্রায় এসে গেছে; ফলতঃ, ওই ধর্মের ওপিয়াম, যেটা মার্ক্স বলে গেছেন; এইখানে এসে আমি একটু ষ্টুপর হয়ে যাই; মার্ক্স না হয় নিজে মার্ক্সিস্ট ছিলেন না, ধর্মাধর্ম (খ্রীস্টিনিয়ানিটি) জ্ঞান কম ছিলো; তাই বলে তাঁর মতকে পথ করে চলা, বা লোহা গরম থাকতে থাকতে, ফ্লেবারটা অক্ষুণ্ণ রেখে, স্যাকরার টুকটাকমাফিক একটু নিজের মতো করে একটু ঘুরিয়ে নিয়ে; তা সে স্থানের অঙ্ক ছাড়িয়ে, মায়, পৃথিবীব্যাপী হলে, অর্থাৎ গ্লোবালাইজড হলে, সব মার্ক্সিস্টকেই, ফুল ফ্লেজেড 'ঈশ্বর, টুকি' বলে যেতে হবে, এমন প্রিরিক্যোয়েজিষ্ট শর্ত কে যে ইম্পোস্ট করলো? নাকি এটা একটা ফিল্টার? মার্ক্সিজমের সদর দরোজায় লটকানো, কে য়্যানে

 

মনে পড়ে, গোল্ডেন ট্রায়্যেঙ্গল আর গোল্ডেন ক্রেসেন্টের সমস্ত ওপিয়ামটাকে গ্যাঁড়াবার জন্য ভারতে থাকা ইংরেজদের কাঙালপনা মনোপ্সনি এবং দ্য দেন ইউরোপে থাকা ইংরেজদের, চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত আফিম জোগানের মনোপলি, যেখান থেকে ষোলো দুকুনে বত্রিশ আনা মুনাফা লুটেছে ব্রিটরাসেসময়ই নিজেদের মধ্যে কি সৎ সম্পর্ক রেখেছিলো ব্রিটরা; এই কোঅর্ডিনেশন না থাকলে, যার নাম মুনাফা, সে তো আর সাড়ে বত্রিশ ভাজা নয়, ফলতঃ অতি অবশ্য লোটার জন্যই, এবং তা লোটা যায়! আর সেটাই তো ইংরেজি জানা ভারতীয় দালাল তৈরী করার প্রথম সোপানের 'অনুপ্রেরণা'ডিরোজিও কেসটা, জাষ্ট ঘটে গেছে, ব্রিটরাও অতোটা চায়নিমাঝখান থেকে, মধ্যসত্ত্বভোগীরা, বোয়াল থেকে, শিলাইদহে জমিদারী কেনার মতোই, বৃহৎ অর্সিন্যেস অর্কাস হয়ে গেলো; ভারতীয়রাই, মেজরিটি ছিলো বাঙালীরই

 

আফিমের মতোই ঈশ্বর নামের কমলালেবুর খোসা ছাড়িয়ে একটার পর একটা কোয়া মুখে ফেলে, 'চেটে চুষে চিবিয়ে গিলে' ফেলাতারাপীঠে গিয়ে, নিজেদের নামে নামে পূজোর ডালা রেডি করার পর, মানে কিনা, আপনি কোপ্নি-টা হয়ে গেলে, সবার মঙ্গলের জন্য পূজো দিতে চাইলে যেমন সবার গোত্র তারামা হয়; আর সেই তারামা গোত্রের মধ্যে যাঁদের বিত্তবল নেই, তাঁদের জন্য, অন্তবিহীন, কাটে না যেন বিরহেরই দিন যেমন, তেমনই, সময় জুড়ে প্রতীক্ষা, তবে ভক্তিরসে টলটলে, শ্রদ্ধাবনততায়, আর ভালোবাসায় সম্পূর্ণ; আর উল্টোদিকে, পাঁচশো টাকার জন্য তিনটে লোকের লাইন, তিনশো টাকার জন্য খান আষ্টেক লোক, দুশো টাকায় তারামার দর্শন হয়ে যাবে গোটা পনেরো লোক পরেই

 

 

.

 

আজ মরলে কাল দুদিন...

 

এইকথাটা আমি আমার জন্মদাতা বাবার মুখে বারদুয়েক শুনেছি; সোর্সটা জানা হয়নি। ... আর আজ তো, আজ কেন, দু'বছর দু'মাস হয়ে গেলো আর-কোনোদিনই-জানতে-পারা-যাবে-না বিষয়টা

 

যখন খুব ছোট ছিলাম, মানে, প্রাথমিক স্মৃতির (এইখানে শালীর কিস্যু করার নেই, কেননা, ব্যাপারটা এল টি এমে ঢুকে গেছে) বয়সে, মনে পড়েঃ বাবি রেএএএএ, সন্ধ্যে যে হয়ে গেলো, ধান কাটতে যাবি নে ! এটা কিছুদিন আগে পর্যন্ত শুনেছি বাবারই স্বরে, পাড়ার কোনো বাচ্চাকে উদ্দেশ্য করে, তার নাম নিয়ে বলতে। 

 

জানা হলো না, বাবা কোথা থেকে শুনেছিলো এই গুটিকয়েক শব্দ। 

 

বাবাদের অনেক জমি ছিলো, যার একটা মাটির ডেলাও বাবা নেয়নি অনেক মানুষের চোখের জল ওইসব জমির দানায় দানায় মিশে আছে বলে, ঠাকুর্দা বারুইপুরের -আনা জমিদারের নায়েব ছিলো কিনা; বাড়ী তৈরীর সময়ে, ষ্টেট ব্যাঙ্কের মামুলি কেরানী বাবা, একটা সময় আটকে গেলে, মাম্মাম (পিতামহী) কিছু থোক টাকা দিয়েছিলো বাবাকে

 

জানি না, সেইসব চাষের জমি থেকে বাবা শব্দগুলোকে কুড়িয়ে পেয়েছিলো কিনা, কোনো আদত কৃষকের মুখ থেকে...

 

...বাবা তো পেরিয়ে গেছেচৌকাঠ

 

আর আমি, আর ফুল চুরির বয়স নেই / আর রসিকতার সুযোগ নেই / আমি দেখছি আমি প্রায় পার হয়ে এলাম (কোটেশনে নেই কিন্তু, কেমন?)

 

.

 

বাবা গোওওওও, সায়াহ্ন যে উপস্থিত, আসবে না মাকে, আমাকে, জয়িতাকে একে একে, এই ক্রমে নিতে !

 

 

 

 

 

অনিন্দ্য ঘোষ ©

ফটোকার্টসিঃ আমি নিজে (লিজ্জত পাঁপরের বিজ্ঞাপনের একদম শেষে এঁ হেঁ হেঁ ধ্বনিটা মনে করুন, প্লীজ)

 

ঋণঃ শ্রী তারাপদ রায়, শ্রী সুবিমল মিশ্র, শ্রী পরিক্ষিৎ বালা এবং আমি সজ্ঞানে বা অজান্তেই একপ্রকার, আমার বাক্যের শুরু, মাঝখান বা শেষে, বহু গায়ক / গায়িকার গানের অংশ, অনেকসময় কবিতার কোনো অংশ, কারোর গদ্যের কোনো অংশ, নামকরণ ইত্যাদি প্রভৃতি ব্যবহার করে ফেলি এখানেও যদি করে থাকি, তো, সেইসব কবিদের, গদ্যকারদের আর গানের ক্ষেত্রে, গানের গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক / গায়িকা সেইসব গানের অংশভুক সকলকে

 

 

No comments: