Monday, November 17, 2025

অমিত মালব্য≈মাল-ই-হইবো গণ

 

 

০৫/০৮/২০২৫-শে এই লেখাটা লিখে আপলোডাতে ভুলে গিয়েছিলাম। এমনসব জিনিস আমার ক্ষেত্রে, হেন্দাই তো হোতাই রহেতা হ্যায় (জানি, সঠিক লিখলাম না, কিন্তু সমঝদারোঁ কে লিয়ে ইশারাই কাফি হোতা হ্যায়)। সেই যখন আপলোড করে খানে দিচ্ছি, সেকালে, তাকে সাম্প্রতিকের সঙ্গে জড়িয়ে নেওয়াই ভালো।

 

 

 

কাট ওয়ানঃ

 

প্রশ্নঃ শ্রী অমিত মালব্য কে?

উত্তরঃ একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ।

প্রশ্নঃ কোন্‌ দলের হয়ে রাজনীতি করেন তিনি?

উত্তরঃ ভারতীয় জনতা পার্টির। তিনি সেই দলের আই টি সেলের আহ্বায়ক।

 

টেন অন টেন পেয়ে হ্লাদিত চিত্তে জানাই, এই বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলেছেন, বাংলা বলে কোনও ভাষা নেই। তারপরও থামেন নি; রাজনীতি যাঁরা করেন, তাঁরা একবার বলতে পারার সুযোগ পেলে সহজে ছাড়েন না, সেক্ষেত্রে কচ্ছপের কামড় লাগে। অ্যালিগরি হিসেবে। কচ্ছপ এসে বিদ্যাসাগরীয় মাসীর কান কামড়ে ধরার আগে জানিয়ে দিই, মালব্য জানিয়েছেন, আপামর আমাদিগকে আশ্বস্ত করেছেন, বাংলাদেশী বাংলা নিশ্চিত জেনে, তারপর তাদের বাংলাদেশে ‘পাঠিয়ে’ দেওয়া হচ্ছে। তাঁর যুক্তি, ভারতীয়রা তো বাংলাদেশী বাংলা বলতে পারে না।

 

আমার সিনেমা-প্রীতির কারণে পৃথিবী জুড়ে ই-পেন পাল ছড়িয়ে আছে। সুদূর চিলে থেকে রাশিয়ার তুমুল ঠান্ডা-প্রদেশ অবধি। বাংলা ভাষায় কোনও সিনেমা সম্পর্কে জানতে হলে আমার কাছ থেকে তারা নয়, তাদের কাছ থেকে আমি ধারণা করার চেষ্টা করি যে, সময়টা পুড়বে, নাকি, কিছু মিলবে। এরা কিছু মার্জিন পাওয়া হিন্দি চলচ্চিত্র পরিচালক বাদে তামিল, তেলেগু ছবিকে সজ্ঞানে লট ধরে বর্জন করেছে, মেইনস্ট্রিম তকমা দিয়ে। অন্য দিকে, অফুরান চাহিদা মালয়ালম ভাষায় তৈরী সিনেমার প্রতি। বাংলা ভাষায় কোনও সিনেমার ডিভিডি বা ব্লু রে (আমার মতো তারাও শেষেরটা প্রেফার করে এবং মাছি খায়) বেরোলেই তাদেরকে পাওয়া যায়।

আমি নিজে যখন বাংলা সিনেমা এনকোড করি, অডিও বা সাবটাইটেলের ভাষা .SUP, .SRT, .ASS ফর্ম্যাটের ক্ষেত্রে উল্লেখ করে দিতে হয় এবং সেখানে রিজিওন স্পেসিফাই করে দিলে সেটা আরও গ্রাহ্য হয়; বাংলাদেশ হলে bn-BD, ভারত হলে bn-IN লিখে দিতে হয়। লিখে দিতে হয় মানে, সফটওয়্যারকে বলতে হয়, ওগো, বাংলাদেশ, কিংবা, না গো, ইন্ডিয়া; অতঃপর bn-BD / bn-IN    সে-ই কোডিফাই করে। সফটওয়্যারের নাম MKVToolNix GUI

 

কাট ওয়ান বাই এঃ

 

আমাদের এই সভ্যতার সাম্প্রতিক হুজুগ হচ্ছে AIপ্রায় সবাই-ই AI হ্যান, AI ত্যান করে যাচ্ছেন; আর যাঁরা বাংলা ভাষা এবং AI নিয়ে কামধাম করছেন, তাঁরা জানেন কৃত্রিম মেধাকেও ভাষা ফিড করাতে হয় একটা সার্টেন এক্সটেন্ট অবধি। কোম্পানিগুলোকে ভারতের বাঙালীদের এক্সপ্লীসিটলি বলে দিতে হয় যে তাঁরা ভারতীয় বাংলা নিয়ে কাজ করবেন। বলা বাহুল্য কোম্পানিগুলো ভিনদেশী। এ প্রসঙ্গে বলে রাখিঃ বাংলাদেশেও কাজ আউটসোর্সড হয়, কিন্তু তাদের ডেলিভারড প্রোডাক্ট দেখে বহু ভারতীয় বাঙালী, বাংলাদেশের এক্সপার্টদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির টি ও আর দেখতে চেয়েছেন;এতটাই থার্ড ক্লাস, জঘন্য কাজ তারা করেছে! তারা এটা করতেই পারে, আফটার অল ওখানেই তো বাংলা ভাষার জন্য রক্ত ঝরেছে, প্রাণ গেছে।

 

তবে অমিত মালব্য অ্যান্ড কোং অর্থাৎ চাড্ডিবাহিনীরা যেটা শুরু করেছে, বি এ বি টি ব্যর্থ চিঠি, অ্যাসিডিটি কিন্তু ওষ্ঠে নিকোটিন ভারতীয় বাঙালীরাই না বাংলা ভাষার জন্য এই ভারত ভূখণ্ডে আর একবার রক্ত ঝরিয়ে ফেলে!

 

ফণীশ্বরনাথ রেণু ছাড়া যে ভাষার সাহিত্য-ঐতিহ্য নেই, বাঙালীরা বাকীদের হিন্দি ভাষায় লেখা সাহিত্য এবং সাহিত্যিককে ওয়া গুরু, কি লিখেছ! ফাটিয়ে দিয়েছ ওস্তাদ! বলে গলা নামিয়ে বলে নে নে, এবার পাঁইটটা বের কর। অর্থাৎ কোনও দিন যাদের লেখা পাতা উল্টে দেখল না, মহারাষ্ট্র, তামিল এবং মালয়ালম ছাড়া আর কোনও ভারতীয় ভাষার সাহিত্যকে গুরুত্বই দিল না (এবং আমার মতে তারা ঠিকই করল), তাদের একজন এসে বলে দিয়ে যাবে বাংলা ভাষা কি ভাষা নয়! এতক্ষণ যা বললাম সব গদ্য সাহিত্য সম্পর্কে। ভারতীয় বাংলা এবং পদ্য এটা নিয়ে ঝাঁপি খুললে তো কাল সকাল অবধি লিখে যেতে হবে।

এখানে উল্লেখ থাকুক, রতন থিয়াম, ভি ভি করন্থ, হাবিব তনবীর প্রমুখ নাট্য ব্যক্তিত্বরা বহুদিন বাংলাতেই ছিলেন। বিজয় তেন্ডুলকর কোনও দীর্ঘ সময় বাংলায় কাটিয়েছেন বলে আমি জানি না, এবং আমার জানাটা শেষ কথা নয়। এই অনুচ্ছেদ একটাই অর্থ বহে নিয়ে যাচ্ছেঃ বাংলা ছাড়া ভারতের অন্যান্য ভাষায় নাটকের কাজ যথাবিহিত প্রশংসার দাবী রাখে।

 

 

কাট টুঃ

 

বাংলাদেশ থেকে ভারতে মানুষের আসা প্রথমে অনুপ্রবেশ ছিল না। এখনও যাঁরা হিলি বর্ডারে (দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়) বা রানীনগর বর্ডারে (মুর্শিদাবাদ জেলায়) যাবেন, তাঁরা বিলকুল চমকাবেন। কাঁটাতার? আরে, হিলি বর্ডারে একজনের রান্নাঘর ভারতে, তো শোবার ঘর, হাগার ঘর বাংলাদেশে, অ্যান্ড ভাইস ভারসা।

কিন্তু এতদিন ধরে মানুষের চাপ নিতে নিতে আমরা সত্যিই ক্লান্ত। আমাদের অবস্থা সার্বিকভাবে আরও সঙ্গীন। উপর্যুপরি, বাংলাদেশের উচ্ছিষ্টাংশ যারা, সেই রোহিঙ্গারা প্রথমে বর্মা (অধুনা মিয়ানমার, যাদের সঙ্গে ভারতের বৈদেশিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই) এবং সেখানে আপন আচরণের জন্য ক্যালানি খেয়ে তড়িপার হয়ে আবার বাংলাদেশ এবং সেখানেও শিকড় হারিয়ে যাওয়ায় ভারতে পাইকারি হারে ঢুকে আসছে। এদের অবস্থা এতটাই অসহনীয় যে এদেরকে দিয়ে কোনও প্রোডাক্টিভ কাজ করানো যায় না। মূলতঃ মাছ ধরা আর ভ্যান্ডালিজম ছাড়া এদের কিছু জানা নেই। বস্তুতঃ আল্লাহ হু আকবর বা বিসমিল্লাহ বা অধুনা আলহামদুলিল্লাহ বলতে শিখলেও কেন পশ্চিমমুখো হয়ে নমাজ আদায় করতে হয়এরা সেসব জানে না।

অতএব কাকে আমরা আশ্রয় দেওয়া বলব এবং কাকে অনুপ্রবেশ, সেটা আগে ঠিক করতে হবে। এবং নীতি এরকম হতেই পারে, যে, মানুষ হোক কিংবা মানুষের ত্বকের তলায় নিয়ান্ডারথালভারত আর একজনকেও অ্যাকোমোডেট করতে প্রস্তুত তো নয়ই, বরং কিছু লোড হালকা করা ভারতের উদ্দেশ্য।

 

এ নীতি গৃহীত হলে বলার তো কিচ্ছু নেই-ই, বরং তাকে সাদরে বরণ করতেই হয়। কিন্তু সময়ের মাপকাঠি যদি ৭০ দশক হয়, তাহলে মুশকিল।

এখন অপারেশন চলছে ২০০২ এর ভোটার লিষ্টের নিরিখে। এক্কেবারে ফেলে দেওয়ার মতো যুক্তি নয় এটা। কিন্তু...

কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিক দেখলেই এবং তার মুখ থেকে বাংলা ভাষা বেরোতে শুনলেই ইয়ে ভ্যাঞ্চোদ বাংলাদেশী হ্যায়এই গ্রস মাপকাঠি সত্যিই গ্রস। পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক। আমার নিজের কর্মাভিজ্ঞতা অন্য জগতের হলেও এটা আমার নিজের চাক্ষুষ করা কারণ আমার একসময়ের কাজের সঙ্গে এটা সম্পর্কিত। আনসেফ মাইগ্রেশন এবং সোর্স সাইড ইন্টারভেনশন ও ডেস্টিনেশন সাইড ইন্টারভেনশন নিয়ে অনেক অ্যাকাডেমিক আলোচনা হয়েছে ভারতীয় সংবিধানকে সাইকোরামা বানিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের অনেক জমিই একফসলি, এবং ভাগচাষী অন্য কোনও কাজ জানে না বলে, রিয়েল এস্টেট বিজনেসে রাজমিস্ত্রীর যোগাড়ের কাজ করবার উদ্দেশ্যে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিয়েছে, এমন উদাহরণ অজস্র। সোনার কাজ যাঁরা করেন, তাঁদের বেশীর ভাগ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালী। অতএব বাংলা বলছে মানেই বাংলাদেশীএই কার্পেট ক্রাইটেরিয়া ঠিক করা এক্কেবারেই ঠিক নয়। এরকম অকুপেশন বা প্রসিডিওরের তালিকা নেহাত কম লম্বা তো নয়ই, বরং গোটা আন-অর্গানাইজড সেক্টরটাকেই এর মধ্যে পুরে দেওয়া যেতে পারে।

 

কাট থ্রিঃ

 

বাংলা-বিদ্বেষ, বাংলা-বঞ্চনা জাতীয় শব্দ শুনলেই আমার একটা প্রবাদ মনে পড়েঃ নেপোয় মারে দই। তুমি কেন্দ্র সরকারের টাকায় কাজ করে (বা না করে, বা অন্য খাতে খালাশ করে) ইউ সি দেবে না, এদিকে সেন্ট্রাল তোমার ট্যাঙ্কি ভরে দিয়ে যাবে গৌরী সেনের মতোরিডিক্যিউলাস। দেশ জুড়ে চলতে থাকা যে স্কিমগুলোকে আটকাতে না পেরে তুমি সাপের ছুঁচো গেলার মতো করে গিলেছ, এবং যেখানে সেন্ট্রাল শেয়ার বেশী; সেখানে টাকা আসতে দেরী হলে (আগেকার দিনগুলোতে তো নাগপুরে তিনদিন টাকাটা বোধহয় শেয়ার বাজারে খাটিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো) তুমি তোমার কন্ট্রাকচুয়াল স্টাফদের মাইনে দিতে গিয়ে বিষম খাও, তোমার মাথায় তিন থাবড়ি জল, তথা, ভর্তুকী লাগে অ্যাড হক বেসিসে... তুমি বাংলাকে বঞ্চনা করার কথা বলো কি করে? সঠিক ক্যান্ডিডেটদের শিক্ষকদের চাকরী দিতে গিয়ে ঘুষ নিয়ে কেলেঙ্কারী করে ফেলে, মানে, ঘটনাটা ঘটিয়ে নিয়ে, হাঁড়ি ফাটলে ‘পর, কেন সে প্রসঙ্গ উঠলো, এই যদি হয় তোমার জিজ্ঞাসা, তাহলে টেইন্টেড কে? বাংলাকে বঞ্চনা ইত্যাদি গালভরা, মনকাড়া কথা বলার অধিকার আদৌ আছে কি? তোমার? মোরওভার, পশ্চিমবঙ্গের সংসদদের মধ্যে এতো অবাঙালী কেন? গ্ল্যামারের পোঙায় দৌড়তে গিয়ে মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ ভুলে গিয়েছিলে বুঝি?

 

বলে রাখা যাক, বাঙালী হিন্দি বলতে কোনও দিনই পারে নি, অসমীয়াতেও সে ফেল, ওড়িয়াতেও সে অলমোস্ট নিরক্ষর, ভোজপুরী ভাষাকে ইতরদের ভাষা মনে করে। অথচ এরা প্রায় প্রত্যেকেই কেজো বাংলা কিন্তু বলতে-লিখতে পারে। তা সে বাঙালী না পারুক, হিন্দি সংস্কৃতির বলয়ে তার লোকাস ডেফিনিট করে বলা যায়। উত্তম কুমারকে মুম্বই ইন্ডাস্ট্রি ঘুরিয়ে পেছন দেখিয়েছিল, আরতি মুখোপাধ্যায় খুব কল্কে সেখানে গিয়ে পান নি; অথচ বাঙালী কিন্তু এইসব অভিমান পুষে রাখে নি! তুলনায়, দক্ষিণ ভারতের ২০০৬ সালের কথা লিখছি, গোটা অন্ধ্রপ্রদেশের কোনও চাইল্ড কেয়ার ইন্সটিটিউশনের বাচ্চা অমিতাভ বচ্চনের নাম শোনে নি; অথচ চিরঞ্জীবি বা মহেশ বাবুর নাম শুনলে মোমের মতন গলে যাচ্ছে, আনন্দেএটাও দেখা আমার। দক্ষিণ ভারত আগে দক্ষিণ ভারতীয়, তার পরে ভারতীয়, ঠিক যেমন নর্থ ইস্ট। বাঙালী কিন্তু এমন নয়। তাহলে বিদ্বেষ বঞ্চনা তো যা থাকার ওদের বিরুদ্ধে বেশী উচিত। হ্যায় কি নেহি? হিন্দি ভাষাকে নিয়ে তামিলনাড়ুতে যা হচ্ছে (স্বাভাবিক জিনিসটাই হচ্ছে) তাতে করে সে রাজ্যকে তো কেন্দ্র’র পক্ষে চেনারই কথা নয়। তাহলে? নেতাজী নিয়ে পিঁয়াজী মারিয়ে আর লাভ নেই, দেখো তো বাপু, কানা খানা গানা ঘানা, কেমন লাগে কুমীরছানা মাফিক ওই এক মুখ সর্বত্র দেখানো হয়ে হয়ে আজ ভোঁতা মেরে গেছে। হয় কোনও বাংলা-বিদ্বেষ, বাংলা-বঞ্চনা’র অস্তিত্ব নেই, আর থাকলে তার কারণ অন্যত্র পোঁতা আছে। খননকার্য চালানো যেতেই পারতো, কিন্তু এই প্রসঙ্গের অবতারণা সে’ কারণে হয় নি।

 

ভারতে যে কোনও জনবহুল রাস্তায় হাঁটা দায় শৌচালয় অর্থাৎ রেস্টরুম না থাকার কারণে অ্যামোনিয়ার প্রাবল্যে; আর এখন মানুষের কথোপকথন দায়, মনের মধ্যে এস আই আর উথলে ওঠার জন্য। কার গাঁড়ে অনিশ্চয় লাথ এসে পড়ে, নিকষ আঁধারে কে কার অপরিচিত হোগা ভরে দেয়... কেন্দ্রীয় ক্ষমতার চোখে এই রাজ্য আবার দ্বিতীয় শ্রেণীর হিন্দুদের, এ শুয়োরের বাচ্চারা গরু, মোষ, শ্যোরসব খায়। সুতরাং এস আই আর পাইকারি রেটে চলছে, নুঙ্কুর ডগা থেকে ছটাক খানেক কাটা দেখলেই আর বাংলা বলছে শুনলেই হাতে হ্যারিকেন ধরিয়ে সোওওজ্জা বাংলাদেশ। এক্কেবারে গ্যালপ চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখানে অমিত মালব্য আরও একবার স্মর্তব্যঃ কি দিয়ে মাপলি বাপ? তোর নরম্যাটিভ মেজার কি কি ছিল? বাংলা তো আবার ভাষাই নয়, তাহলে ওটা কি? ধোকলা না আলুর চোকলা?

 

কিন্তু রাজ্যের ঘাড়ে ভোট যখন বন্দী চন্দ্রবোড়ার মতো ফোঁসফোঁস করছে, তখন জানা গেলো প্রচুর মৃত বাঙালীর নাম ভোটার তালিকা থেকে সরে নি। তারা খুব সম্ভব স্বর্গ/নরক (কর্মফল বেসিসে) থেকে এসে ই ভি এমের বোতাম টিপে যায়। তা মাগনায় টেপাটিপি করার জন্য এটুকু ধকলও নেবে না? প্রসঙ্গতঃ কিছু মৃত সজ্জনও আছে, টেপাটিপি প্রসঙ্গে যাদেরকে মনোগ্যামিস্ট বলা যায়, এই যেমন আমার বাবা। ২০২১ এর জানুয়ারীতে আমার বাবা মরে গিয়েছে, এবং বাবার নাম ভোটার লিস্টে নেই। পাশাপাশি, ২০২০ সালে মারা যাওয়া এক প্রতিবেশী, দুজনেই পাঁড় এ দেশীয়, সে যাক, যে যে দেশিও-ই হোক না কেন, ফেলাশিও না হলেই হলো; কিন্তু তাঁর নাম আছে! তা এটা কি চিত্রগুপ্ত করে পাঠিয়েছে? যদি না হয়, তার অর্থ একটাই, এক জাতীয় ক্রিটিকাল মিনিমাম রিভিশন হয়েই চলে। কমন সেন্স অ্যাপ্লাই করলেই বোঝা যায়, ভোটার লিস্টের মতো একটা খতরনাক জিনিস মিনিমাম, সুবিধেজনকভাবে অন্ততঃ, আপডেটেড থাকবে না? হতে পারে, আমার বাবা খুব পরিচিত মুখ ছিল তল্লাটে, তার অংশতঃ রাজনৈতিক শিক্ষাও ছিল, ডু’জ অ্যান্ড ডোন্ট’স সম্পর্কে প্রখর আইডিয়া ছিল, কিন্তু সে মরে গেলে সেসব আর কোথায়? বরং বলা যায়, সেসব সে সঙ্গে নিয়ে গেছে। লিগ্যাসী বলতে প্রদীপের সলতে যথা আমি, তা আমার তো ডান দিকে সরলে বাম দিক বেরিয়ে পড়ে—আমাকে নিশ্চয়ই এতটা গুরুত্ব কেউ দেবে না। তবুও হয়েছে। বাবার নাম নেই। গেল ভোটে বাবার নামে ছিলিপ এলো না দেখেই আমার সন্দেহ হয়, এবং আমি লিস্ট দেখে কনফার্মড হই (আক্ষরিক তৃপ্ত হয়েছিলাম সেদিন, কারণ বাবা বামপন্থী, আরও পরিচ্ছন্ন করে বললে মাকু—অতএব, এদের কাউকেই সে কাস্ট করত না, আর অধুনার সিপিআই(এম)কে কাস্ট করা মানে, কলাপাতা দেওয়া, ওভারহেডে, অন্ততঃ বিজেপি’র বয়ানে, তাদের কপালেও। তাই বলে বাবা কি চাড্ডী পার্টিদের কাস্ট করবে? – রামোঃ চন্দ্র। তাহলে? বাবার ভোট কিন্তু মুখ ঘুরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ফেবারেই যেত; তবুও কিন্তু নাম নেই অর্থাৎ, বিজেপি’র একটা নিশ্চিত ভোট কাটা, কাটা পড়ল। তবুও নেই)। এর মানে তো একটাই দাঁড়ায়—রিভিসন একটা হয়ই। যার নাম বাদ যায় নি, তাঁর পরিবারের জীবিত সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে আমি প্রশ্ন রাখছি এই মর্মে, একটা পরিচ্ছন্ন ভোটার যে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন—এই বার্তাটা ইলেকশন কমিশন অবধি পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁরা কী কী করেছেন।

 

এসব জেনেও একটা গোটা রাজ্য যদি উত্তাল হয়, বুঝতে হবে এর মধ্যে অন্য অভিসন্ধি আছে। অবশ্যই একজন মুসলমান কিন্তু ভারতেরই বৈধ নাগরিককে শুধুমাত্র বাংলা বলার কারণে বাংলাদেশে চালান করে দিলে প্রতিবাদ তো অনিবার্য, কিন্তু তাই বলে এস আই আর করতেই দেবো না, এইরকম মূর্খের বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোর মধ্যেও গরিমা বিশেষ নেই; বিশেষ করে, বিরাট সংখ্যার অবৈধ ভোটার এবং মৃত ব্যক্তির নাম ভোটার লিস্টে রয়ে যাওয়ার অভিযোগ জ্বলজ্বল করছে যেখানে।

 

কাট ফোরঃ

 

তথ্য জানাচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে বেআইনীভাবে ভারতে মানুষের ঢোকার হার বেড়েই যাচ্ছে। যখন ‘বেআইনী’ শব্দটা লিখে ফেলেছি, তখন আইন একটা খুঁজতে হয়। ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৩৯, কোয়া ১৯৪৮ কোয়া ২০২৫ হলো গিয়ে সেই কাঙ্ক্ষিত আইন। বলে রাখা যাক, এই আইনে কোনও শিশু বা মহিলাদেরকে রাখা হয় নি। একজন শিশু বা মহিলা একা, বা শিশু কোলে মহিলা একা, ভারতে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্তর ছাড়া চলে এলে সেটা অনুপ্রবেশ নয়, ব্যাপারটাকে মানব-পাচার অর্থাৎ বাংলায় বললে, হিউম্যান ট্র্যাফিকিং-এর অ্যাম্বিটে রেখে দেখা হবে। এবং অবশ্যই সেক্ষেত্রেও রি-প্যাট্রিয়েশন অর্থাৎ আপন দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপার থাকবে কিন্তু তার জন্য ২৩ সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট প্রসিডিওর আছে (যাঁরা এ ব্যাপারে জানতে আগ্রহী, তাঁরা MHA এর  সাইট সার্ফ করে দেখে নিতে পারেন)। বাকীদের ক্ষেত্রে? বাকীদের ক্ষেত্রে যদি খালি হাত শাম আয়ি হ্যায় হয়, তাহলে খালি হাত যায়েগী-ই হবে। মহিলা এবং শিশুদের প্রতি এহেন দরদ দেখানোর কারণ?—ওই যে, ভারতীয় সংবিধানের ১৫(৩) ধারা এবং পজিটিভ ডিস্ক্রীমিনেশন। তা বাংলাদেশের সব মহিলা বা শিশু কি কচি ছাগলের মতো অবোধ যে কাঁঠালপাতা চিবোতে চিবোতে শান্তভাবে হাড়িকাঠে গলা দিয়ে দেবে?—মোটেও না, অনেকেই জানে ‘ইন্ডিয়া’ গিয়ে ঠ্যাং ফাঁক করতে পারলেই দেদার টাকা। পাখির পেলব পালকের মতো উড়ছে, শুধু ধরে নিতে হবে। রেসকিউ হওয়া যেসব বাংলাদেশের কিশোরীদের আমি দেখেছি, তাদের প্রায় সবারই মুখে প্রতি দুই শব্দের আগে-পরে ‘মাদারচোদ’ শব্দটা যথাক্রমে সহগ এবং পুচ্ছ হিসেবে ধকধকিয়ে জ্বলে (বাংলাদেশের কমেন্টে দেখবেন মেটার ভয়ে সবাই ‘মাদারবোর্ড’ লিখছে, অর্থাৎ, ওদেশে এ শব্দের দারুণ চল আছে), তারা বোঝে নি কিভাবে তারা অ্যাদ্দিন ধরে টাকা কামালো আর বাড়ীতে টাকা পাঠাল? কারোর মুখে কোনও অনুতাপ নেই, অনুশোচনা নেই;— যেন বেড়া ডিঙিয়ে ঝালমুড়ি বা আলুকাবলি খেতে এয়েছিল! তাহলে? তাহলে আর কি, ভারতবর্ষের সংবিধানের স্পিরিট, শত শত অপরাধী ছাড় পেয়ে যাক, কিন্তু একজন নিরপরাধও যেন সাজা বা দন্ডভোগ না করে। তাছাড়া আন্ডার এইট্টিন কাজ করে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তার ফলাফল ঠাহর করতে না পেরে; এটাও আমার দেখা। সুতরাং, শিশু, তা সে যে দেশেরই হোক না কেন, তাদেরকে একটু পজিটিভ মেজারে পর্যালোচনা করাই সমীচীন।

 

কিন্তু অ্যাডাল্ট পুরুষদের জন্য কি বরাদ্দ রেখেছে ভারতবর্ষ?—সেখানে, কি আইনে, কি জিও-তে ডিপোর্টেশন বলা আছে, কোথাও পুশ ব্যাক শব্দটা নেই। পুশ ব্যাক মানে কতকটা এইরকম, ভারতের রাম, শ্যাম, যদু বাংলাদেশের কোনও চোদুকে কাগজপত্তর ছাড়াই এ দেশে ঢোকার পর বামাল পাকড়ায়, ও ফলতঃ, দেশপ্রেমের ব্যাটারিতে চার্জড হয়ে গাঁড়ে লাথ মেরে বাংলাদেশেই ফেরত পাঠায়, সেটা হলো গিয়ে পুশ ব্যাক। আর রাষ্ট্র যদি পে-লোডারে করে বেড়ার ওপর দিয়ে বাংলাদেশের লোক সন্দেহে মানুষকে বাংলাদেশে ছুঁড়ে ফেলে দেয় (এটি আমার ভিসুয়াল এবং প্রিন্ট মিডিয়ালব্ধ তথ্য), সেটাকেও অবশ্যই পুশব্যাক বলাই হবে। সে অবশ্য কেউ বলতেই পারে, মানুষও মানুষের গলার ফাঁস দিয়ে খুন করে, আর ফাঁসিও এদেশে বিরল নয়; সেক্ষেত্রে আমার বলার কথা একটাই—রাষ্ট্র অহরহ ফাঁসিকাঠে চড়াচ্ছে না মানুষকে, রেয়ারেস্ট অফ দ্য রেয়ার ক্রাইম করলেই অনেক ভেবেচিন্তে ফাঁসির নির্দেশ আসে। সেখানে অ্যাপিলের একটা ব্যাপারও থাকে। দুটোকে এক করে দেওয়া মানে, ধর্মকে ধর্মতলায় নিয়ে গিয়ে... ওই হলো গিয়ে, কিছু একটা করা। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ থাকুক, আমি, ব্যক্তি অনিন্দ্য ঘোষ, ফাঁসির ঘোরতর পক্ষে;—রেয়ারেস্ট অফ দ্য রেয়ার ক্রাইম করবে, আর সংশোধনাগারে গিয়ে, পট করে, ছিল রুমাল হয়ে গেলো বেড়াল যথা সংশোধিত মন-মাথা হয়ে যাবে—এমন আশা মরণোন্মুখ চাষাতেও করে না; বরং আমাদেরই ফিরে দেখার সময় হয়েছে রেয়ারেস্ট অফ দ্য রেয়ার ক্রাইমের তালিকা এক্সহ্যস্টিভ কিনা, ওটা দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ভীষণভাবে উল্লেখ থাকে যে, এই আলোচনাতে আন্ডার এইট্টিন মানুষদের কথা একেবারেই আসছে না।

 

কিন্তু পুশব্যাক, তাও পে লোডারে চাপিয়ে; উপায়টা অভিনব সন্দেহ নেই, কিন্তু এটা আদৌ করা যায় কি?—পরিষ্কারভাবে—না। বরং বলা যাক, পুশ ব্যাক একটা অমানবিক কাজ এবং গোটা পৃথিবীর সব কটা দেশ এটাকে, নাহ্‌ ব্যান করতে না পারলেও সমস্বরে নিন্দা, মানে, বাংলায় বললে, কনডেম করেছে। এটা প্রকাশ্যে করা একধরনের মূর্খতা মাত্র, যেটা দেশের বাইরে দেশের ভাবমূর্তি খাটো করে, যেমন বাংলা কোনও ভাষা নয়, এ জাতীয় মন্তব্য দেশের মধ্যেই দেশের ভাবমূর্তিকে বামন বানিয়ে দেয়; অতি মূর্খতেও এহেন মন্তব্য করার আগে সামান্য থমকাবে। যাঁরা তর্ক চালাতে চান, তাঁরা ভাষাতত্ত্ব অর্থাৎ লিঙ্গুইস্টিক্স নিয়ে লেখাপড়া করা কোনো ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করে আসবেন।

 

আমি গ্রামদেশে বড়ো হয়ে দেখছি, মানে, বাংলায় বললে রিয়েলাইজ করেছি, যে, আমি ধানগাছ, নারকোল, সুপারি গাছের মধ্যে দিয়ে এসেও, শাক-পাতাড়ির রেশ মেখে এসেও আজ, এই অবেলাতেও, মননে, ব্যবহারে বড়ো অপ্রয়োজনীয়ভাবে আরবান। আমি পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম মায় পশ্চিম মেদিনীপুরের মধ্যে গ.সা.গু হিসেবে খুঁজে পাই ‘বটে’ শব্দটিকে, বাদবাকী আমি তফাত বুঝি না। আমি রঘুনাথগঞ্জ, ধুলিয়ানের করিয়েন না গ’, যাইয়েন না গ’ ইত্যাদির সঙ্গে রাজশাহীকে বেমক্কা, বেমদিনা গুলিয়ে ফেলে উঠতে পারি। কুমারগ্রাম, দিনহাটার বাংলাকে আমার অবিকল ঢাকা, ফরিদপুরের বাংলা বলেই মনে হয়। এই আমিটা কে? এই আমিটা হলো সেই বাঙালী যে একবার নিজের মাতৃভাষা শুনতে পেলে ‘পর বাংলা ছাড়া অন্য ভাষা বলতে আর পারে না, তা সে মার দিয়া যায়ে, ইয়া ছোড় দিয়া যারে, বল তেরে সাথ ক্যেয়া সুলুক কিয়া যায়ে? আর সেই আমি যদি বাংলার অ্যাক্সেন্ট, ইভন ডায়ালেক্ট শুনে জায়গা লোকেট করতে না পারি, কোন্‌ সে ম্যাজিক স্টিক হাতে আছে মালব্যদের, যার বলে তাঁরা বুঝে যান কোন্‌টা বাংলাদেশী বাংলা, আর কোন্‌টা নয়?

 

তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়াইলো কিডা? অমিত মালব্য, সে তিনি যতই জনাদেশ পেয়ে (বা না পেয়ে, এমনও তো হতে পারে, দলের আভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত ছিল সেটা) আসুন না কেন, তাঁর বচনে প্রমাণ, তিনি যে ধর্ম না জেনে ধার্মিক, রাজনীতি না বুঝে রাজনীতিক – শুধু এতেই সীমাবদ্ধ নন, বদ্ধ ঘরে থাকতে না চেয়ে, জগৎ দেখতে গিয়ে, অতি বড়ো মূর্খও বটেন।

 

 

প্যান একঃ

 

এই অমিত মালব্য গোছের মূর্খদের জন্য একটা মৃদু, আলতো, মধ্যবয়েসী তরুণীর বুকের মতো নরম রিমাইন্ডারঃ ভারতবর্ষ নামে যে দেশটা আছে, যাদের ন্যাশনাল অ্যান্থেম পৃথিবীর স্যুইটেস্ট অ্যান্থেম, সেটাও কিন্তু না, ওই বাংলা ভাষাতেই লেখা।

 

পুনশ্চঃ ০৫/০৮/২০২৫-শে এই লেখাটা লিখে আপলোডাতে ভুলে গিয়েছিলাম। এমনসব জিনিস আমার ক্ষেত্রে, হেন্দাই তো হোতাই রহেতা হ্যায় (জানি, সঠিক লিখলাম না, কিন্তু সমঝদারোঁ কে লিয়ে ইশারাই কাফি হোতা হ্যায়)। তো, এস আই আর চলছে। এখন। বাবার নাম দেখলাম ২০০২ এর তালিকায় ধকধক করছে; তার ভোটার এন্যুউমারেশন ফর্মও দিয়ে গেলো, এবং পাশের সেই প্রতিবেশীর বাড়ীতেও, যিনি আর এই মরলোকে নেই, দুজনেই ২০০২ তে কত তাগড়া, কত কর্মক্ষম, পটু, অভিজ্ঞ, দায়িত্ববান; আর ২০২৫ শে শুধু পটে লিখা আর ওই যে সুদূর নীহারিকা। সেই প্রতিবেশীর নাম এবারভোটার লিস্ট থেকে বাদ দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে তাঁর মেয়ে। কী করতে হবে অনিন্দ্যদা—বার কয়েক ঘুরেও গেলো। অথচ প্রথমে যা যা শুনেছিলাম, সেই যে সেই সব—প্রত্যেক বাড়ী গিয়ে, অর্থাৎ লোকেশন থেকে কিউ আর কোড স্ক্যান করে ল্যাট-লঙ জানানো... অবশ্য কাকেই বা আর জানাবে, নির্বাচন আয়োগের কোনও আধিকারিকই নেই, অথচ দেশের সবচেয়ে সন্দেহভাজন রাজ্যে, নগরে নাকি ঝিল্লী দিয়ে ঝাড়াই-বাছাই করা হয়ে গেলো বৈধ-অবৈধ ভোটারদের। সব বি এল ও-রা ফর্ম দিচ্ছে বাড়ী এসে ঠিকই, কিন্তু ফর্ম জমা নিচ্ছে পার্টির হোল-টাইমারদের বাড়ীতে; যারা লিখতে পড়তে জানেন না, তাঁদেরকে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে টি এম সি’র অফিসে। এই টি এম সি পার্টিই কিন্তু এস আই আরের আগাগোড়া বিরুদ্ধে ছিল, এক নকশাল নেতাকেও নাকি গতকালও বলতে শোনা গেছে যে, প্রত্যেকেই নাকি এখন বিশ্ব-নাগরিক। তা টি এম সি পার্টির না হয় স্বার্থ আছে, আর স্বার্থ দেখে চলে না কোন্‌ সে মহাজন দু হাজার পঁচিশের; কিন্তু এদের যে ঠিক কী আছে, মানে, এক্স্যাটলি কোন্‌খানে যে এদের ব্যথা এবং সেটা কোন্‌ মলমে যে সারবে, গোটা গ্যালাকটিক স্পেসে তার উত্তর নেই। সাধে শুয়োরের বাচ্চাদের মাইক্রোস্কপিক ক্রিচার বলে! চীন জানিয়ে দিয়েছে তাদের দেশে কোনও নাগরিক মুসলমান থাকতেই পারে; কিন্তু নাম দেখে তাদের চেনা যাবে না; অর্থাৎ রিলিজিওন স্পেসিফিক নামকরণ চলবে না, নেশন স্পেসিফিক নোমেনক্লেচার হতে হবে। জানি, গণতন্ত্রের তুমুল বিরোধী কথা এটা, আর আমি গণতন্ত্রকে রাজনীতির ঈশ্বর মানি, কিন্তু এরা জগদ্দল পাথরের মতো অক্ষয় অব্যয় হয়ে থাকবে, বাকী পৃথিবী কিন্তু প্রতিটা মুহূর্তে মওকার সঙ্গে সিঙ্ক করছে।

 

ওদিকে মালব্য গ্যাং বলে দিয়েছে এই যে এস আই এর—এর ফলে যদি একটাও বৈধ মুসলিম ভোটার ভোটাধিকার তথা দেশাধিকার হারান, তাহলে এস আই এর-বিরোধী সব সেক্যু পার্টিদের বিপ্রতীপ মিছিলের আপফ্রন্টে তাঁরা থাকবেন—এত অবধি শুনতে বেশ লেগেছিল, মনে হচ্ছিল, মাটিতে যে আজ স্বর্গ এসেছে নামি, কিন্তু তারপরই দৈববাণী হলোঃ কিন্তু এস আই আর-এর ফলে যতজন অবৈধ বসবাসকারীদের ভারতে পাওয়া যাবে, তারা সবাই-ই মুসলমান;—অ্যাজ ইফ, ২০০২ এর পরে ভারতের নাগরিক নন, এমন কোনও একজন হিন্দু, অন্য কোনও রাষ্ট্র, হ্যাঁ, বাংলাদেশকেই মীন করতে চাইছি, থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেন নি। এরা কি ভাবে কমোনারদের? মানুষ বোকা হতে পারে, কিন্তু বোকাচোদা নয়।

এস আই আর, গো অ্যাজ ইউ লাইকের মাঝপথেই তার সাজ খুলে গেছে, আর আমরা বুঝে গেলাম, চোখে মুখে জল দেওয়া হচ্ছে মাত্র, স্নান করা নয়। গায়ের ঘাম, তেল-চিট ময়লা সাফা করা নয়।

 

ভাই, তোদের খিদে—টাকার, ক্ষমতার—তোরা যা খুশী কর, কিন্তু মূর্খের মতো ‘বাংলা কোনও ভাষাই নয়’ বলিস-টলিস না; রাজনীতি করা মানুষদের কাছে আমরা একটা বেসিক এডুকেশন আশা করি। রামমোহন রায় যদি ব্রিটদের দালাল হন, তাহলে এটা ড্যাম শিওর, ২০২৬-তে গণেশ উল্টোলে আর যাই হোক, না হোক, বাংলাতে সতীদাহ আবার শুরু হচ্ছে।

 

 

 

 

 


 

 

 

অনিন্দ্য ঘোষ     ©

 

ফটো কার্টসিঃ  গুগল ইমেজেস 

ঋণ/রেফারেন্সঃ আমি সজ্ঞানে বা অজান্তেই একপ্রকার, আমার বাক্যের শুরু, মাঝখান বা শেষে, বহু গায়ক / গায়িকার গানের অংশ, অনেকসময় কবিতার কোনো অংশ, কারোর গদ্যের কোনো অংশ, নামকরণ ইত্যাদি প্রভৃতি ব্যবহার করে ফেলিএখানেও যদি করে থাকি, তো, সেইসব কবিদের, গদ্যকারদের আর গানের ক্ষেত্রে, গানের গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক / গায়িকা ও সেইসব গানের অংশভুক সকলকে

 

No comments: