Saturday, November 15, 2025

সীমার প্রহরা, প্রহরার সীমা

 

 

সীমার কথা কোনও দিন বলা হয় নি, তাই সীমাকে টপকে যাওয়ার কথাও না বলাই থেকে গেছে। এই এতগুলো দিন! এখন তো মন্দিরে ঘন্টা বাজলেও মনে হয়, ওই তো, পাগলা ঘন্টি বেজে গেলো! এসব মনে হওয়া যেমন ঠিক, তেমনই বোধ করি, এটাও লেখা ভুল হবে না এবার যে, অন্ধ স্কুলে ঘন্টা বাজার সময় সত্যিই হয়ে এলো। অনেক বড় কাজ যা যা, এবং যাদের এখনও ধরাই হয় নি, ভাবনাতেই রয়ে গেছে, আর সেগুলোর অবতারণায় আর লাভ নেই; বরং অনুচ্চারিত কিছু কথা যা খুব ছোট করে বলে নেওয়া যায়, এই ফাঁকে বলে নেই। পরে, ভুলেও যেতে পারি, কিংবা

মোটকথা হলো, যা এই পড়ন্ত বেলা থেকে সন্ধ্যেএই সীমার মধ্যে আঁটিয়ে দেওয়া যায়, লেখার সেটুকু-ই । সীমা আপনারা যাঁরা এখনও দেখেন নি, তাঁরা নিজেদের সীমার মধ্যেই সেঁধিয়ে যান; কে যেন বেশ, আমারই বন্ধু, একটা ছেলেকে, যার দু কানেই পুঁজ জমে জমে এঁটে যাওয়া সীমাবদ্ধতাসেসব ফেঁড়ে অ্যাসিড রক আর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রাগ-রাগিণীর পরিকল্পিত মিশ্রণ বোঝাতে গিয়েছিল; তারপরের খবর আমি সঠিক জানি না; তবে এটা জানি, যাঁরা সীমা ব্যাপারটাকেই জানলেন না, বুঝলেন না, তাঁরা সীমা পেরোবার কথা ভেবে কেন আর মিছিমিছি হৃদয় খুঁড়বেনওখানে কষ্ট ছাড়া আর কিছু রাখা নেই। কেউ রাখেই না। তা সে আপনারা তেত্রিশ বলুন, বা তেত্রিশ কোটি।

 

আচ্ছা, আপনারা হোম করা দেখেছেন কখনও? হোম বলতে হোম-যজ্ঞ বোঝাতে চাইছি আর কি! অক্ষম প্রয়োগ তো সবসময়ই ক্ষমার্হ, নয় কি? যদি দেখে থাকেন, হোম-যজ্ঞ, একেবারে শুরু থেকেহোম-যজ্ঞের সামান্য আগে করা দিকাঙ্কনও নির্ঘাত দেখে থাকবেন। তারপর তো আসে সমিধ সাজানো। খান আটাশ সমান্তরাল, তার ওপর আটাশখানা উল্লম্ব, তার ওপর সাতাশটা সমান্তরাল, তার ওপর সাতাশটা উল্লম্ব... এভাবে সজ্জাটা দুটোয় নামে। তারপর শুরু হয় অধ্যক্ষ, তন্ত্রধারক, হোম-যজ্ঞের উপবীতধারক ইত্যাদিদের আত্মশুদ্ধি, যা যা দিয়ে আহুতি দেওয়া হবে, তাদের শুদ্ধিকরণ। অতঃপর শুরু হয় কিছু প্রাথমিক মন্ত্র। অগ্নিকে চিরপ্রণম্য বোধ করেই আহ্বান করা হয়, তিলেক দাঁড়াতে বলতে হয়। কেননা, বদন ভরে মন্ত্রোচ্চারণের ভিতর দিয়ে শেষমেশ তো সেই মা-কেই ডাকা হবে। কিছুদিন আগে কালীপুজো গেল, তাই এটাই মনে এলো। আজব ব্যাপার হলো, এরপর অগ্নির একটা সাময়িক নামকরণ করা হয়; মূলতঃ যে দেবতা আরাধ্য, তাঁর নামেই নাম পড়ে আগুনের। কালীপুজোর কথা যখন লিখেই ফেলেছি; এত ন্যাংটো লেখা যে কেন লিখি আমি... অক্ষমতারও তো একটা সীমা থাকা উচিত, হ্যায় কী নেহি বলুন; যাই হোক, এবার দেখলাম, হুতাশনের নাম হলো দক্ষিণা কালী। হাহুতাশ করার দরকার এখনই নেই, কারণকি, মায়াজালে একা মানুষ আটকে নেই, সেই সীমার মধ্যে, যেন খেপলা জাল, অনেকেই আছে।

 

সীমা বলতে গেলেই কাঁটাতার, পাথুরে কঠিন দেওয়াল এইসব মনে আসে। আবার দেওয়াল বললেই মনে হয়, পেরিয়ে যাওয়ার উস্কানি, তবে সেই উস্কানিতে এই চেতাবনীও আছে যে, রক্তাক্ত হতে হবেএসব হবে, হয়, হয়তঃ আগেও হয়েছে এমন, যে, পিছু ধাওয়া করেছে শস্ত্রসমেত কিছু মানুষ। অস্ত্র গৌরবের জিনিস, আর তারাও একা ছিল না হয়তঃ। সীমা এইরকম, আবার সীমা এইরকম নয়ও। কোথাও কিছু নেই, আপনার দেখেই মনে হবে, এই তো, একটা ফুটবল পেলে এখনই চনমনে নেমে যাওয়া যায়, কিংবা, গোবরের এমন ধারা নিকানো যে যায়, যাতে করে তকতকে কথাটা ক্লিশে লাগে, বদলে, বলা ভালো, যে, পরিচ্ছন্নতার অহমিকা জন্মে যায়, এমন এক বাড়ী। আপনি কিন্তু জিজ্ঞাসা করলে আচম্বিত, বলতে পারবেন না, সেই মাঠের কোন্‌ জায়গা দিয়ে, কিংবা সেই বাড়ীর উঠোনের ঠিক কোন্‌খানটা দিয়ে... সীমা চলে গেছে।

 

হোম-যজ্ঞ এবং মন্ত্রোচ্চারণের জন্য যাঁরা হাসছেন, যাঁরা বলতে চাইছেন ওমা, এই দেখো, পুজোর কথা লিখতে গিয়ে এত লোকের কথা লিখছে, আচারের কথা কথা লিখছে, আরে, এসব শুধুই রীতি-রেওয়াজ, এখানে সাধনা কই, এখানে গাজন হচ্ছে ভাই, আরাধ্যা-আরাধক থাকেন নির্জনে;তাঁদেরকে বলি, যতগুলো মত, ঠিক ততগুলোই পথ। কথাটা হলো, যে হাঁটছে, সে কতটা বিশ্বাস সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে পারছে। এখানে বলে রাখা ভালো, আমিও ধীর হে, আমি নির্জনের পিয়াসী। নির্জন মানেই সে অরব, সুতরাং বাঁশী যে ভেসে আসবে, এ আশা বোধহয় কেউ করেন না। যদি কেউ করেন তেমনতর, তাহলে তিনি নির্ঘাত জানেন যে, পোড়া বাঁশী শুনলে ঘরে টিকতে না চাওয়া মন, সুর শুনে যদি দিক গুণে নেয়, আর জান হাথেলী পে রেখে ছুট লাগায় বাঁশুরিয়ার দিকে, যেন গিয়েই বলবে, এ শহরে এসছ তুমি কবে কোন্‌ রাজ্য থেকে, তোমাদের দেশে বুঝি সব মানুষই বাঁশী শেখে; তাহলে সে বড় ভুল করবে, কেনকি, কাছে গেলে সে বাঁশুরিয়ার, যায় সে দূরে, ফিরলে ফিরায় বাঁশীর সুরে। আর এভাবেই সে লুকিয়ে বেড়ায় ক্ষণে ক্ষণে, আড়ালপথে, শ্রোতার মনে। সুতরাং সে ওই জাগতিক তথা মৌহর্তিক ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে যায়, তবে সে ইশারা দিতে ভোলে না, নির্জনের দিকের ইশারা; কেননা, তার দায় আছে, সকল ভুবন আঁধার করে, সেই সে লোকের ঘরে রসের বাতি জ্বালানোর। অর্থা, ঘরেতেই, সকলের মাঝে থেকেই নীরবতা। তবে হ্যাঁ, এরও সুর আছে, নিজস্ব সুরনৈঃশব্দ্য যদি ক্যানসারের মতো করে বাড়তে পারে, তাহলে, আগুনের মতো করে নীরবতাও ধরে যেতে পারে। তলানিতে জল এমন এক গহন কিন্তু পরিত্যক্ত কুয়োয়, সাপের বিষের কিলবিলানিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নেমে আসা ঝরোঝরো বৃষ্টির শব্দের চাপা প্রতিধ্বনির মতো, কিংবা হয়তঃ তেমনটা নয়, অন্যরকম; তবে একটা কিছু আছে। নাহলে, কোনও মেয়ের শুকনো চোখে রঙে-রঙের ভালোবাসা নামে কী করে!

 

ভালোবাসার কথা উঠলেই লোভীর লালা লকলকের মতো মুখখানিকেও যে চকচক করে উঠতে হবে, এমন নিশ্চয়তা আপনাকে কে দিয়েছে? সীমা আর সীমা পেরোনোএই আওড়ের মধ্যেই কিন্তু আইনের স্থাণু আছে, আইনের দোলাচল আছে, আইনের মুখ আছে, আইনের মুখোশ আছে। আইন সবার আগে সাম্যের কথা বলেছে, ঠিক তার পরে পরেই মানবিক, তথা ধনাত্মক পৃথকীকরণের কথা বলেছে। আইন কাজের শেষ দেখেছে, দেখে নিয়ে কাজের দাম তৈরী করেছে, আইন কাজের শুরু দেখে নি, কাজের পিছনে থাকা দাহ দেখে নি, আইনের নির্ধারণ করে দেওয়া কাজের দাম যে সর্বাঙ্গে সঠিক, হলফ করে বলার ক্ষমতা, আজ অন্ততঃ, কারোর কাছে নেই বলেই আমার ধারণা লাগে। আইন, সীমাকে একভাবে পেরোতে সম্মতি দিয়েছে; মজার ব্যাপার হলো, সেই ভাব নিয়ে সীমা কেউ-ই প্রায় পেরোয় না; সবাই-ই প্রায়, তখন, ভাবের ঘরে চুরি করে, অথবা, সবারই প্রায়, তখন, ভাবের ঘরে অভাব দেখা যায়। আইন চেয়েছে সীমার এক পারে, যেটা কিনা উস, আত্মা থাকুক, শরীর আসুক এপারে, যাতে তার ফিরে যাওয়ার টানটুকু থাকে; আইন এ-ও চেয়েছে, নাদানি যাদের পৃথকের ঘরে রাখল, তাদেরকে শরীরকে এতটাই ধনাত্মক পারিপাট্য রেখে আত্মার কাছে পাঠাতে হবে, যে পারিপাট্য বজায় রাখতে গেলে আত্মার আয়ু ফুরিয়ে যায়। আর আত্মা হারিয়ে গেলে যে টানের রাশও আলগা হয়ে যাবে, সীমার এপার আর সীমার ওপারের মধ্যে মানুষ দরাদরি করবেভেবে দেখ, কিসে লাভ, ভেবে দেখ কিসে ক্ষতি, ভেবে দেখ কিসে হবে অগতির সদগতি; ও ফলতঃ, সীমাখানি রয়ে যাবে ঠিক যেন পুষে রাখা সাদা হাতি।

 

ভালোবাসার কথা যখন লিখেই ফেলেছি, তখন না হয়, আরও এক কলম লিখিতখন প্রাক যৌবনকাল, সবে ইস্কুলের সীমা আইনানুগ ডিঙিয়ে, মানে, কিছুই না শিখে, এবং উপলব্ধিতে এলে, আর শেখার ইচ্ছে জাগলে পর শরীরখানা আবারও ফিরে যাবে সীমার ওপারে, হুই ইস্কুলের কাছে, যেখানে আমার, আত্মাটা অবধারিত রাখা আছে, মহাবিদ্যালয়ে, মানে, কলেজে আর কি (এই শব্দটা কোনও দিন লিখি নি, আজ আর একটা মওকা পেলাম, ঝেড়ে দিলাম), একটা পাশ দিয়েছি;কৈশোরকালের বন্ধুরা ঠিক করল, চড়ুইভাতি হবে। তখনও শীতকাল মানে প্রথমে ছাতিম ফুল, পরে কমলালেবুর গন্ধ। এবং চড়ুইভাতি হলোও। সে এক অলীক চড়ুইভাতি। তার জায়গা, চড়ুইভাতিতে সামিল বন্ধুরা, চড়ুইভাতির রান্না... বলতে গেলে চড়ুইভাতির গোটা দিনটাই অলীক, এমনকি, যখন অকুস্থলের উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বেরোইও নি। চড়ুইভাতির দিনটাতে, আজও মনে আছে, এবং বোধহয় সঙ্গে যাবেও সেই স্মৃতিআগে থেকেই ছকা ছিল, গোটা বেঁচে থাকা ইস্তক রাতে বাংলা খাওয়া আমি, ওইদিন, ছাঁচ ভেঙে, দিনে উদ্দাম হয়ে যাব কোনও কিছু বাছবিচার না করে। সেই মতো হয়েও ছিল, চড়ুইভাতি যেখানে হয়েছিল, অমন বিস্তীর্ণ প্রান্তর আমি আর হয়তঃ কোনও দিন দেখব না। অথচ জায়গাটা ছিল মূলতঃ একটা ভেড়ি। বিলগুলো সব দূরে দূরে, মাঝখানে সেই মাঠ, বিলের ধারে ধারে নিরালা কুঁড়ে, সেখানেই ছিল সেমাল খেয়ে লাট। মালের চাট হিসেবে যে প্যান্থারাসটা বানানো হয়েছিল, তাতে হাঁস, মুরগী, খরগোশ, ছাগল, ভেড়া, মায় একটা বাছুরের পর্যন্ত কিমা ছিল, নাড়িভুঁড়ির মিশেলে আর নয় নাই-বা গেলাম। দুপুরের দিকে, না, না, চৈতন্য আমার আজও হয় নি, তবে চেতনা ফিরেছিল। ফিরতে দেখেছিলাম, জোগাড়ে-রাঁধুনি সব রাঁধছে, কিন্তু আমার বন্ধু-বন্ধুনীরা কেউ কোত্থাও নেই। ওরা কি আদৌ এসেছিল, এমনটা ভাবতে ভাবতেই নির্ঘাত পেচ্ছাপ করতে বিলগুলোর কোনও একটার দিকে এগিয়ে গিয়ে থাকব, মাথা আর তলপেট একসঙ্গে ভেরে গেলে যেমনটা লাগে, ঠিক তেমন। আর সঙ্গে সন্ধানী চোখ, বাকী বোতলগুলো সব গেলো কোথায়!

তলপেট হালকা হলে বোধহয় কানও সজাগ হয়, অন্ততঃ মদ পেটে থাকলে; আর আমি দারুর সন্ধানে যাব, তেমনই যেতে সংযত, প্রস্তুতএমন সময় একটা কুঁড়ে থেকে আমার এক বন্ধুনীর পরিচিত স্বর থেকে যে শব্দগুলো চেঁছে এলো, তাকে লিখি। ভূমিকা করে নেওয়া যাক, লিখতে গিয়ে বেশ পুলক হচ্ছেআমি কোনও লেখক নই, ফেখক হতে পারি বড় জোর, তবুও একটা শব্দ আজ আমি প্রথম লিখছি

মনেতে হাত

স্তনেতে নয়

খুললে পোশাক

অলাত বলয়

পুড়ে খাক হয়ে যায়

মন আর সব অঙ্গ

ছাইয়ের নীচে প্রেম হাসে

মুখে তার মুখোশের অনুষঙ্গ

 

 

বোধহয় প্রেম শব্দটাও প্রথম না হলেও, খুব কমবার লিখেছি, আমার বাজী তো ভালোবাসা। সে যাক, মেয়েটি কি ঠিক বলেছিল?হ্যাঁ, সে ঠিকই বলেছিল, এবং না, সে ঠিক বলে নি। ঠিক যে বলেছিল, সেটা সেই সময়ের ওই জ্ঞ-ঞ্জ অবস্থাতেই বুঝেছিলাম, পরে পরেই শুনেছিলাম জড়োসড়ো স্বরধ্বনি কিছু; আর ভুলটা খুঁজে পেয়েছি এই বেলাশেষে। ইদানীং, ইদানীং-ই বা কী করে লিখি, বিতর্কিত শব্দ থাক; মানুষ তাক্ষণিক স্বার্থের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। সেই ঠেস দেওয়া ভঙ্গি থেকে সে কখনওই জানতে যায় না, তার স্বার্থের অপর পারে যে, সেই তার স্বার্থ কেমন আছে, তার এই স্বার্থ-সর্বস্ব চালটা দেওয়ার পর;স্বাভাবিকও এটা; কেন শুধোলে বলতে হয়, একাধিক সীমা স্তর পেতে থাকে দুই মানুষের সম্পর্কের ভেতর; সীমার অপর পারে যে, সেই তার কেমন লাগছেএটা কি সে কখনও ভেবে দেখেছে যে কিনা হাতটা রাখল? পরম কোমল, কমনীয় একটা জিনিসের পরে হাত রাখতে অন্য একজনের সাধ যেতেই পারে, এটা দোষের কিংবা অস্বাভাবিকের কিছু না, যদি অপর পক্ষের অসম্মতি তাতে না থাকে; কিন্তু সীমাটা এখানেই দেগে দিলে চিত্তির। একটা ছেলে যদি একটা পরিণত মেয়ের বুকে হাত রেখে জিজ্ঞাসা করে, বলো, কেমন কাটালে আজ গোটা দিনটা?বোধ যায়, যে মেয়েটা উত্তরে খারাপ বলতে যাচ্ছিল, এই ভঙ্গিতে বুঁদ হয়ে গিয়ে হয়তঃ বলেই ফেলবে, তা মন্দ কী, বেশ কেটেছে, দিব্য কেটেছে। আর তোমার? সম্পর্কের গোড়ায়, যদিও আমি এসব গাছ-গাছালির মালী নই এক্কেবারেই, এভাবেই সার পড়ে, জল পড়ে, ও ফলতঃ, সম্পর্কের পাতা নড়ে। অন্যথায়, সম্পর্কের একটা দিকের স্বার্থ আহত, অন্য দিক, সেই কারণেই, হানিকারক। সীমা জিনিসটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে, বোধহয়, খুব সংবেদনশীল। আর পোশাক খুললে আগুন একটা বেরোয় ঠিকই, যার জেরে বিছানা গরম হয়, বালিশের তুলো ওড়ে। এত অবধিই ছিল সেইসময়ের উপলব্ধি। আমার। কিন্তু এসবে তো মন-মগজ তথা সম্পর্ক আরও ঘন হওয়ার কথা, পুড়ে ছাই হবে-ই বা কেন, আর যদিও বা কোনও অজ্ঞাত কারণে হয়েও যায়, মুখে সে মুখোশ আঁটবে কেন? সবথেকে বড় কথা, আগুন জিনিসটা কি এখানেই সীমাবদ্ধ? দেখা যাক, এ লেখা তেমনই বলে কিনা।

 

সীমাকে জেনে, কি, না জেনে, আইনানুগ না টপকানোর পর ধরা খেলেই লাফড়া প্রচুর। আইন সীমা পার হয়ে আসাদের আর অভিবাসী বলে না, সটান হেঁকে দেয়, অবৈধ অনুপ্রবেশকারী। তখন তাদের শ্রেণী বিভাজন চলে;কে বা কারা যেন ভেদ্য হওয়ায় পৃথক হয়ে যায়, আর আইন তাদের জন্য লিখিত পদ্ধতির বিন্যাস সাজায়, যে পদ্ধতিতে তারা তাদের রেখে আসা আত্মার কাছে, অর্থা সেই, যার নাম জন্মভূমি, তার কাছে ফিরে যাতে পারে। আর যতদিন না পারে, থাকতে হয় প্রতীক্ষায়, ততদিনের জন্য সুরক্ষিত আবাস। অপরপক্ষ, তার কাজের দাম দেয়। আইনকে। নিজের জন্মভূমির সীমার অপর পারে থাকা দেশকে। সীমার এপারের মুলুকের হাজত তাদের জন্য হাঁ-মুখ খোলা রেখে বসে থাকে আইনের স্বর শোনবার জন্য।

 

হোম দিয়ে যে প্রসঙ্গের জের শুরু হয়েছিলচড়ুইভাতির মদ নয়, মদ তো এখানে একটা উপ-আচার মাত্র, সম্পর্কের আওড়ে পড়ে নাকাল হচ্ছিল। বস্তুতঃ সম্পর্কের বলবার কথা এত বেশী, আর হোম-যজ্ঞ ইত্যাদির এত কম, যে, হোম-যজ্ঞ আর সম্পর্কের মাঝে আয়াস ছাড়াই একটা সীমা টেনে ফেলা যায়। সীমার ওপারে, হোম-যজ্ঞের লোকেরা বারবার সম্পর্ক ছেড়ে আসার কথা বলে, যেখানে সীমারেখা বরাবর গান বাজেঃ তোর সংসার-ধর্ম বড় ধর্ম মা, তাই পারি না ছেড়ে যেতে...

হোম-যজ্ঞ যখন তুঙ্গ পর্যায়ে, তার ওপর কাঁচা লোহার চার-পেয়ে একটা চালি খাড়া করে বসানো হয় কড়া, ঢালা হয় দুধ এবং মধু, এলাচ, কেশর ইত্যাদি আরও কিছু উপকরণ, মূলতঃ সুগন্ধিম, মূলতঃ পুষ্টিবর্ধনমএগুলোর দায় অধ্যক্ষের, বাকীরা নিমীলিত চোখে মন্ত্রোচ্চারণে আর জীবন্ত আগুনে আহুতি দিতে মগ্ন। ধীরে ধীরে, বহু সরে ও স্তরে আরাধ্যার সামনে তৈরী হয়ে যায় চরু। সেইসময় বাইরে তাকালেভোর হয়ে আসছে, পাতলা হয়ে গলে যাচ্ছে গরম অন্ধকার। যা কিনা আদতে শাশ্বত!

 

সীমা আর আইনএমন নয় যে এরা একই মুদ্রার দুই পিঠ। সীমা টপকেছে এবং সেটা আইনানুগভাবে আদপে নয়, এমন বহু ঘটনাই আইনের সামনে এসে ওঠে না। সেই অন্তরীণ বাঁশুরিয়ার মতো পালিয়ে বেড়ায়। তারা সীমার অন্যপারে, যেখানে তাদের আত্মার বাস নয়, দাপিয়ে বেড়ায়, অধিকার চায়, অর্থাৎ, দ্বিতীয়বারের জন্য আইন ভাঙে। সীমার যে পারে এসব ঘটছে, সে অঞ্চলতা সে যতই উদার মনেরই হোক না কেন, তাকে থমকাতে হয়। গোটা পৃথিবী আমার আতিথ্য নিতে পারে, আমি দিতেও রাজী আছি তা, কিন্তু আমি কোনও ধর্মশালা খুলে বসি নি। তাকে চিরুনী বের করতে হয়। না, উকুন খুঁজে আঙুলে টিপে মারার মতো কোনও লক্ষ্য নেই তার, সে অঞ্চল দেখে তার চারপাশে যে সীমা আছে, তাকে আইন ডিঙিয়ে টপকে আসা মানুষগুলোর হদিশ তাকে পেতে হবে, তারপর তাদের পাঠিয়ে দিতে হবে তাদেরই আত্মা ধরে ধরে নানাবিধ তল্লাটে।

 

হোম-যজ্ঞ, চরু হয়ে গেলে সম্পূর্ণ, শেষ হওয়ার মুখে। এবার প্রয়োজন হয় যে যে পরিবর্তন করে সেই হোম-যজ্ঞ শুরু হয়েছিল, সেইসব পরিবর্তনগুলোকে ফিরিয়ে নিয়ে সবকিছুকে আগের মতো করে দেওয়ার। পাবকের সাম্প্রতিক দেওয়া নাম ফিরিয়ে নেওয়া হয়। প্রত্যেক দিক, যাদের সশ্রদ্ধ শনাক্ত করে হোম-যজ্ঞ শুরু হয়েছিল, তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়, লক্ষ্য শেষ, এবার মানুষের যা যা ইতর-বৈশিষ্ট্য তাদের কাছে বন্ধক দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার ও মানুষের ফিরিয়ে নেওয়ার পালা। চিরপ্রণম্য অগ্নিকে সেদিনের মতো শেষ নমস্কার জানিয়ে সমুদ্রে ফিরে যেতে বলেন হোম-যজ্ঞের উপবীতধারীরা। বৈশ্বানর জেগে হাজির থাকলে শান্তির জল ছেটানো যায় না।

 

আদর্শ সময়ে আইনে যে যে ভাবে সীমাকে টপকানোর কথা বলা হয়েছে, তার বাইরে কোনও ভাবে টপকালেই সেটা চ্যুত ব্যবহার এবং আইন তাকে ছাড়তে চায় না। সে দাম চায়, চ্যুতির মূল্য। কিন্তু যখন লক্ষ্যাঞ্চলে সংকট কাল, তখন আইনকেও হালকা হাতে খেলতে হয়। বিচ্যুত কিন্তু সীমার অন্য পারে থাকা মানুষদের বিচ্যুতির মূল্য না চুকিয়েই, আইন তাদের সীমার এপার ছেড়ে যেতে বলে। স্থবির, অবিচল মানুষেরা নিদান দেন, আইনের মুখে ওটা মুখ নয়, ওটা মুখোশ; প্রকৃত প্রস্তাবে, তাঁরা মুখে-মুখোশে গুলিয়ে ফেলেন।

 

হোম-যজ্ঞের কাঠ সাজানো থেকে শুরু করে বিভাবসুকে মাঝে রেখে হোম-যজ্ঞের উপবীতধারীদের প্রদক্ষিণ করা আমায় মনে করিয়ে দিচ্ছিল চিতাকাঠ সাজানোর কথা। সেখানে অবশ্য কৃশানুকে নয়, মৃতকে কেন্দ্র করে উত্তরসূরী হাঁটে সর্বভুককে সঙ্গে নিয়ে; চরু নয়, সেখানে পিতৃ-মাতৃঋণ শোধ হয় মুল্য ধরে দিয়ে। সেখানে শান্তির জলের কোনও ব্যাপার নেই, ছাইগাদা থেকে ডোমের খুঁজে দেওয়া অক্ষয় নাভি সরাতে আলাদা করে নিয়ে, তাকে মাটি চাপা দিয়ে, বাকীটুকুতে জল ছিটিয়ে আর তার দিকে ফিরে না তাকিয়ে চলে যাওয়া আছে। নাভি গেড়ে দিতে হয় অন্যত্র, যেমন করে সীমার তোয়াক্কা না করে পৃথিবীর সর্বত্র, সাধারণ মানুষের সব বয়ান গেড়ে দেওয়া হয়।

 

সীমা আর সীমা টপকানোর কথা এলো, অথচ মানবিকতার কথা, যা মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়, যে সচরাচর অতীতের থেকে উঠে আজকের মানুষের কাছে প্রথমত চেতনার পরিমাপ নিতে আসে, অথচ সেই তার কথা একবারের জন্যও এলো নাএ হয় না। সীমা যারা আইনানুগ টপকায় নি, তারা যে সুখে, আহ্লাদে, আমোদে সেটা করেছে, এমনটা না; অনেকেরই সীমা লঙ্ঘনের পথ বরাবর এগিয়ে গেলে অশ্রুর অপার বিন্দু দেখা যাবে, যেগুলো গেঁথে নিলে একটার পর একটা, সিন্ধু না হোক, আমাদের বৈশাখ মাসে হাঁটু জল সম্বল ছোট নদীটাকে হয়তঃ পাওয়া যাবে। সে যাক, বিষাদ সিন্ধু হলেও বা কি আর করা, যখন কিনা আমার ঘরের সবার অন্ন জোটে নি, প্রদীপ জ্বলে নি, অনেকেরই এ বর্ষায় কেন, কোনও বর্ষাতেই কোনও আশ্রয় নেই, ভাগ্যের ভরসা করলেও দিন গুজরান হয় না। বরং একদিন খেয়াল করি আচমকা, আরে, ছিল তো, এই সেদিনও। নেই আজ! কবে থেকে নেই? সুতরাং নিজের পরিবারের যখন ক্ষুণ্ণিবৃত্তি হয় নি, তখন অন্যকে শরণ দেওয়া উন্মাদের কাজ। উন্মাদ প্রসঙ্গে একটা কথা না লিখে পারছি নাতাদের শ্রেণীবিন্যাসে আবেগের স্থান খুব ওপরে। আবেগ যদি বেতালা লয়ে চলে আর তার সঙ্গত দেয় ব্যবহারের বিশৃঙ্খলা, তাহলে একা একটা মানুষে প্রলয় ঘটিয়ে ফেলে। স্বীয় পরিবার অভুক্ত, আর আমি দৌড়াচ্ছি বিভোর অন্যকে অন্ন জোগাড় করে দেবো বলে, এতে প্রলয়ই আসে। সুতরাং, এমনিতেই আপনি আর কোপনিকে আগে বুঝলে শান্তি নিশ্চিত; অপিচ, এ তো সীমার অবৈধ লঙ্ঘনে অনুপ্রবেশকারী। এ শরীরকে তার আত্মার কাছে না পাঠানো অমানবিকতা, একে সীমার গুরুত্ব না বোঝানো পাপ। একটা নির্দিষ্ট সময়কে মাপকাঠি করে মুলুক বরাবর চিরুনী তল্লাশী চালালে পুণ্যিই হবে, কেননা এটা না করা, মানে, আমিও সীমাকে পাত্তা দিচ্ছি না। বিশ্বব্যাপী ভ্রাতৃত্বের কথা জন লেনন বলেছিলেন, এ কথাটা সবাই জানে ও বলে, কিন্তু তার নয় বছরের মধ্যেই যে গুলি খেয়েছিলেন এবং মরে গিয়েছিলেন, সেটা কেউ জানলেও বলে না। কিছু মিষ্টি থাকে, যারা বোয়ামেই ভালো, জিভে নয়;তাতে পেটের গোলমাল হওয়ার শঙ্কা থাকে।

 

এবছরে প্রাপ্তি বলতে আমার ওই একটাইএকটা হোম-যজ্ঞকে কাছে থেকে দেখা। দেখে আমার বারংবার এটাই মনে হয়েছে, পুরো ব্যাপারের প্রতিটা ধাপে কোথাও না কোথাও, কোনও না কোনও ভাবে মৃত্যুর দ্যোতনা আছে। হয় মিলে, নয় গরমিলে। বেঁচে থাকা জুড়ে মানুষ একটা তল্লাশ জারী রাখে, অনেকটা জগ মেঁ যো বুরা হ্যায়, হাম দেখেঁ না শুনেঁ, কাটোঁ কো হটা কে ফুলোঁ কো হাম চুনেঁ-এর মতো, জীবনভর নানান প্রতিসরণ সত্ত্বেও তল্লাশের প্রতিপাদ্য মোটের ওপর এই-ই বোধ হয়। আর এই তল্লাশেরও একটা সীমা আছে। তার নাম মৃত্যু। বলতে চাইছি, খোঁজ সফল হোক বা বিফল, উদযাপন একটা দিতেই হয় একটা নির্দিষ্ট সময় পর। একটা কালীপুজোর হোম-যজ্ঞ শেষ হতে পারে, আর একটা খোঁজ, তথা, জীবনের সমাপ্তি নেই? সফল বা অসফল ব্রত যেমন উদযাপনে শেষ, অর্থা সেই সীমা টানার গল্প; বেঁচে থাকার উদযাপন তাহলে মৃত্যু, নইলে তো আয়ু অনন্ত হয়ে যায়। কোনও কালীপুজোয় করা হোম-যজ্ঞ বিফলে গেলে বিষাদ-সিন্ধুতে মজে যাওয়ার কোনও দরকার নেই, কারণ পরের বছরে একটা কালীপুজো আবারও হবে। গোটা। একটা বেঁচে থাকা বিফলে গেলেও অনেকটা সেই রকমই;পরের জন্ম। হোম-যজ্ঞ এভাবেই আমাদের জন্ম-মৃত্যু চক্রের তন্ত্র শেখায়। আর সেই জন্যই, পোশাক খুললে যে আগুনের বলয় নাচে ইলেক্ট্রিক চুল্লীর জেগে ওঠার মতো, প্রথমে হালকা গোলাপী, তারপর লালাভ হলুদ এসে ঘুরে যায় চুল্লির ঘরের দরোজা বরাবর, আসলে সে জানান দিয়ে যায় সে প্রস্তুত; আর সেই জন্যই, একটা ছেলে একটা মেয়ে, নিরালায় যদি, জীবনের নিয়মেই একটা সময় তাদের শরীরে পোশাক না থাকারই কথা, কিন্তু ওই বিছানার আগুনই শেষ কথা হলে, সম্পর্ক নয়, সম্পর্কের ছাই এসে জানান দিয়ে দিয়ে যায়, একটা সুঠাম ভালোবাসা নিয়ে সেও নাকি প্রস্তুত! আর সেই জন্যই, প্রশ্নটা হচ্ছে সম্পর্কের সীমা তুমি কতটা বাড়াতে পারছ; আর সেই জন্যই, হোম-যজ্ঞের সমিধ সাজানো হয় চিতাকাঠের মতো, তেল ঘি হোম-যজ্ঞে আগুনে দেওয়া হয়, শ্মশানে, মৃতর গায়ে ঘি-মাখন লাগিয়ে আগুনে পাঠানো হয়। আর সেই জন্যই হোম-যজ্ঞে আগুনের নাম দেওয়া হয় দক্ষিণা কালী, যে মায়াজালে বদ্ধ, যে সন্তানকে কোল দিতে কৈলাসের সব সুখ ছেড়ে এসে, আটশো ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের চুল্লীর ভিতর বসে থাকে, সংসার জ্বালায় জ্বলে মরা সন্তানকে মরণের ছলে স্নেহ আঁচলে ঢাকা কোলে তুলে নেয়, ওই হোমানলের ভিতর। আর সেই জন্যই, সীমা প্রগাঢ় হয়ে যায়। তার ওপার ঝাপসা। অসংজ্ঞাত।

 

 

 

 



 

অনিন্দ্য ঘোষ   ©

 

 

অলংকরণঃ কো পাইলট, বন্ধু, এ আই।

ঋণ/রেফারেন্সঃ আমি সজ্ঞানে বা অজান্তেই একপ্রকার, আমার বাক্যের শুরু, মাঝখান বা শেষে, বহু গায়ক / গায়িকার গানের অংশ, অনেকসময় কবিতার কোনো অংশ, কারোর গদ্যের কোনো অংশ, নামকরণ ইত্যাদি প্রভৃতি ব্যবহার করে ফেলিএখানেও যদি করে থাকি, তো, সেইসব কবিদের, গদ্যকারদের আর গানের ক্ষেত্রে, গানের গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক / গায়িকা ও সেইসব গানের অংশভুক সকলকে

তবুও সাধ্য মতো রেফারেন্স তালিকা একটা নীচে পেশ করলাম।

উল্লেখ থাক, এই রেফারেন্সগুলো কোনও নির্দিষ্ট ক্রমে সাজানো নয়—যেমন করে তারা আমার মনে এসেছে, তেমন করেই এখানে রয়ে গেছেঃ

·         🔔 অন্ধ স্কুলে ঘন্টা বাজবে কখন” সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়

·         🙏 তিলেক দাঁড়া ওরে শমন” রামপ্রসাদ সেন

·         🖋কেউ কথা রাখেনি” সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

·         🕉৩৩ কোটি দেবতা পুরাণীয় বিশ্বাস

·         🙏 ভেবে দেখ মন, কেউ কারোর নয়” রামপ্রসাদ সেন

·         ⚔️ অস্ত্রের গৌরবহীন, একা” শক্তি চট্টোপাধ্যায়

·         🌿 যত মত, তত পথ” শ্রী রামকৃষ্ণ কথামৃত

·         🎼 আমি চঞ্চল হে, আমি সুদূরের পিয়াসী” রবীন্দ্রসঙ্গীত

·         🎶 পোড়া বাঁশী শুনলে…” আশা ভোঁসলে (প্রাইভেট বাংলা অ্যালবাম)

·         🎤 এ শহরে এসছ তুমি…” কবীর সুমন (বাঁশুরিয়া)

·         🎵 কেউ জানে না, তা কেউ জানে না” হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (প্রাইভেট অ্যালবাম)

·         🎧 “Silence like a cancer grows…” Paul Simon (The Sound of Silence)

·         🎨 তার চোখে নেমে আসা, রঙে ভালোবাসা” মহম্মদ রফি (প্রাইভেট বাংলা অ্যালবাম)

·         😶🌫বিলগুলো সব দূরে দূরে, মাঝখানে সেই মাঠ... লাট” হাট”  যতীন্দ্রমোহন বাগচী

·         🎹 লোভীর লালা লকলকে” কবীর সুমন (ছোট’য়-বড়’য় মিলে, ফেলুদা গান)

·         🎸 ভেবে দেখ, কিসে লাভ…” চন্দ্রবিন্দু (আনন্দ সেন)

·         🪶 কবিতার তুলো ওড়ে” শক্তি চট্টোপাধ্যায়

·         🔱 “…সুগন্ধিম, …পুষ্টিবর্ধনম” মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র (শিব)

·         🔥 ও চিরপ্রণম্য অগ্নি” শক্তি চট্টোপাধ্যায়

·         🌌 মানুষের মৃত্যু হ’লে তবুও মানব থেকে যায়;” জীবনানন্দ দাশ

·         🌊 আমাদের ছোট নদী” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

·         🙏 চাই না মাগো রাজা হতে” রামপ্রসাদ সেন

·         🎼 আজ নয় গুণগুণ গুঞ্জন প্রেমে” লতা মঙ্গেশকর ও সলিল চৌধুরী

·         🌍 “Imagine” জন লেনন

·         🎥 जग में जो बुरा है…” কিশোর কুমার (আজাদ সিনেমা)

·         📖 বিষাদ-সিন্ধু” মীর মশাররফ হোসেন

·         🕯শ্মশানে জাগিছে শ্যামা মা” কাজী নজরুল ইসলাম (নজরুল-গীতি)

 

এবং ব্যবহৃত কবিতাংশটি দোখনো ফোকলোর থেকে নেওয়া।

 

No comments: