অ্যান অথর ইজ নট পার্ট অফ হিজ টেক্সট। অথচ আমরা তার গুহ্যদ্বার খুঁজি কাঠি করবো বলে। ঠিক এই জায়গায় বাঙালী কাঁকড়ার জাত হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করে।
তবে একটা কথা, যদি কোনো ফিকশন ন্যারেটর, ন্যারেটিভের বদলে প্রবন্ধ নামান, যা তিনি অনায়াসে পারেন, এবং যদি সেখানে ঔচিত্যবোধ এবং অনুচিত্যবোধ লিখিত হয়, তাহলে, সেই অথর কিন্তু পার্ট অফ দ্য টেক্সট। তখন কাঠি হাতে বেরোনো স্বাভাবিক এবং সেটা সব জাত করে, শুধু বাঙালী নয়।
অর্থাৎ কাঠি নিয়ে কেউ বেরোবে কিনা, সেটা, আলটিমেটলি লেখকই পরোক্ষে ঠিক করে ফেলেন।
রবীন্দ্রনাথের মতো করে কেউ দেশকে বোঝেননি। নাহ, মহাত্মা গান্ধী (অধুনা গাঁধি) পর্যন্ত নন। একদিক থেকে রবীন্দ্রনাথই ভারতবাসীর জনক; তাঁদের রুচিবোধ থেকে জীবনবোধের পিতৃসম। এ তাঁর প্রবন্ধ এবং চিঠি থেকে অনেকটাই বা পুরোটাই সারফেসড হয়।
কিন্তু যিনি গোরা নামক প্রবন্ধ-কাম-উপন্যাস লিখবেন, বহু প্রবন্ধেই যাঁর, জাতির প্রতি, অন্ততঃ বাংলা পড়তে পারে যে, তার বা তাদের প্রতি ঔচিত্যবোধের সীমানা টানবেন, তখন কিন্তু, সরি টু স্যে, যে, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও তো ডিসেকশনের ডোমেইনে চলে আসবে; এটা,ওই, কি যেন বলে, হ্যাঁ, ভগীরথের গঙ্গা বয়ে আনার মতো নয়, এই প্রভিসন রবীন্দ্র-প্রদত্তই।
আবার এটাও সত্যি যে, তাঁর এবছরের শারদে চিঠিগুলো নিয়ে যেমন নারদে নারদে লাগলো, সেই তাঁর, সমস্ত চিঠিগুলোই যথাবিহিত সংরক্ষণ করে, আমরা, বলে দিতে পারি, যদি ভারতবাসী ধ্বংস হয়, তার পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা আমরা করে গেলাম (দক্ষিণ ভারত বাদে)।
তা স্বাধীনতা এনে দেবো, নক্স্যালিজমের মতো রেজিমেন্টেড অথচ সাক্রেড ধারণাকে পোষণ করবো, তার ইম্পলিমেন্টেশনের পথ বানাবো উন্মাদ, ছাগসম, আবার ভারত পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করে দেবো, তা ভাই আর কি কি করলে, বাঙালী হেট্রেড দূরীকরণ করা যাবে। দেশ অজানা হয়ে যায় মেধাগত ফারাকের জন্য তৈরী হওয়া বিদ্বেষে। সাধে কি বলি, সাউথ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া চেনে না, জানে না, জানতে চায়ও না।
তবে একবার, আবার, তাঁর প্রগতিসংহার বা শেষের কবিতা (একদম খাজা লেখা যদিও; শাস্তি তুলনামূলক ভালো, কারণ আখ্যানের বুনন, যেটা প্রগতিসংহারে নেই; নামটা দেখে এবং তিনটে কি চারটে অনুচ্ছেদ পড়লেই, আপনি স্বগতোক্তি করবেনঃ মরেচে, এ মেয়ে বাঁচলে হয়!
অথচ আপনি গল্প লিখতে বসবেন, কিন্তু, আখ্যান, মানে, বালিশের খোল দেবেন না, শুধু তুলো ওড়াবেন, তা তো হয় না, টেল আপনাকে বলতেই হবে। অথচ রবীন্দ্রনাথ, এই আখ্যানের ভিতর বা শাস্তির আখ্যানের ভিতর যে গল্পটা বলতে চাওয়া হয়েছে, (যেখানে রবীন্দ্রনাথ নিজেকেই বারংবার টপকে এগিয়ে যেতে চেয়েছেন; মানে, ট্রান্সেন্ড করতে চেয়েছেন, সাবলিমেট করতে চেয়েছেন, মানে, সেই চরৈবতি কেস; হয়তঃ পারেননি, ডাহা ফেল করেছেন, আফটার অল নশ্বর মানুষই তো, কোনো ঈশ্বর তো আর নন; আর ঠিক এক্স্যাক্ট যেখানে, শরৎ চাটুয্যে মাটি নিয়েছেন); আখ্যানের অন্দর থেকে যে প্রশ্নটা পাঠকমননে ইন্টারপোলেট করতে চেয়েছেন, সেটা তো আজও প্রাসঙ্গিক।
সচরাচর মেয়েরা ফর্মেটিভই হয়, পুরুষরা, নাহ, কোনোও স্ল্যাং নয়, ধরুন, উড়নচণ্ডী; ওই জন্য আমেরিকাতে ষাটের দশকের মতো সংবেদনশীল জগতে জন ব্যায়েজ ছাড়া খুব বেশী মেয়েদের দেখা পাওয়া যায় না, কিন্তু কি গগঠনমূলক (যেমন, জন লেনন), কি ভাঙনমূলক (যেমন, জিম মরিসন), দুদিকেই ছেলেদের ভিড়, কারণ সামার অফ লাভ সবকিছুকে "কেন" দিয়ে জানতে চেয়েছিলো, ইন্টারন্যাশালিজমের ধারণাকে ইম্পলিমেন্ট করতে চেয়েছিলো; আমরা তার ঢেউটা পরে পাই, হরে রাম হরে কৃষ্ণ -এর মতো কিছু চলচ্চিত্রে সেই ডেকাডেন্ট ট্রেন্ডটাকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে); তো, তাঁর প্রগতিসংহার বা শেষের কবিতা পড়ে নিয়ে, কেউ, বলেন, আঁচ্ছা, ওঁর সঙ্গে কাদম্বরী দেবী বা ভিক্তোরিয়া ওকাম্পোর কি'রম সম্পক্ক ছিলো, তাহলে, তিনি, আর যাই হোক, পাঠক নন। তিনি পাঠ নিতেই জানেন না।
কি সর্বনাশ, কত্তো লিখে ফেলেছি। অ্যাতো জ্ঞানগম্যি আমার! জানতাম না তো।
অনিন্দ্য ঘোষ ©
ফটোকার্টসিঃ গুগল ইমেজেস।
ঋণঃ আমি সজ্ঞানে বা অজান্তেই একপ্রকার, আমার বাক্যের শুরু, মাঝখান বা শেষে, বহু গায়ক / গায়িকার গানের অংশ, অনেকসময় কবিতার কোনো অংশ, কারোর গদ্যের কোনো অংশ, নামকরণ ইত্যাদি প্রভৃতি ব্যবহার করে ফেলি। এখানেও যদি করে থাকি, তো, সেইসব কবিদের, গদ্যকারদের আর গানের ক্ষেত্রে, গানের গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক / গায়িকা ও সেইসব গানের অংশভুক সকলকে।
No comments:
Post a Comment