পূর্বকথাঃ ফেসবুকে, ‘বইপোকা’ বলে একটা সাহিত্য পাঠ এবং আলোচনার গ্রুপ আছে। সেখানে অনেক হেভিওয়েট লেখক এবং চূড়ান্ত মেধার পাঠকেরা আছেন। আমি সে' গ্রুপের একজন সদস্য। নিজেকে ধন্য জ্ঞান করে থাকি, চারপাশে এতো প্রতিভাবান মানুষ, তাঁদের মাঝে ব্রণও নয়, এক্কেবারে ফুস্কুড়ি যথা আমি কমোনার।
তো, সেখানে শ্রী ব্রতীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো এক অস্বাভাবিক ভালো মনের মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয়ের সুযোগ হয়; যেটা বন্ধুত্বে যেতে দেরী হয়নি। তা, ইয়ে, দোষটা ইনিশিয়ালি আমারই, বেগ, মানে যাকে কিনা আবেগ বলে, সেই অন্ দ্য ভার্জ অফ্ ইমোশন, এমনি এমনি কি মহাজ্ঞানী-মহাজনেরা ইমোশনকে কন্ট্রোল করার কথা বলে গেছেন, অনেক দুঃখে সাবধান করে গেছেন পরবর্তী প্রজন্ম-সমূহকে; তা’ গ’র (হর্নি হওয়াটাও তো দিনের শেষে ইমোশনের র্যেল্মে পড়ে, হ্যায় না?) চূড়োয় থাকলে যা হয়, বোধবুদ্ধি, জ্ঞানগম্যি লোপ পেলে, ও ফলতঃ, একটা সময় মৌলিক লেখা লিখতুম বলে ফেলায়, তিনি আমার ওপর দোষারোপ করা শুরু করলেন। না পড়েই ধরে নিলেন, আমি নোব্যেল পেরাইজ পাওয়ার মতো লেখক, এবং আমাদের মতো লেখকেরা লেখা চেপে দিই বলে, বাজারে নাকি এই অ্যাত্তো খেলো লেখক! অতএব দায়, অন্ততঃ পরোক্ষভাবে হলেও, নাকি আমি এড়াতে পারি না। তিনি এমনতর অনুরোধ করায়, বার খেয়ে গেলুম, তারপর যা হয় আর কি, সাইজড্ হয়ে গেলুম; - ভাবলুম, দিই। লেখা।
তারপর যা হয়, চোরকাঁটা, আমি যেমন, সহজ-সরল বিশ্বাস, মানুষ প্রসঙ্গে বলছি, তা তো অনেকদিনই হয়ে গেলো যে হারিয়ে ফেলেছি; মনে হলো, লেখা না হয় দেবো, কিন্তু পাঠক কেমন?
বীজ রুইতে বলছেন, ব্রতীকবাবু, তা দেখে নেবো না মাটি কেমন! অভিজ্ঞ চাষা এ ছাড়া তো অন্যথা করে না। তা, একটা স্যাম্পল টেস্ট করলুম। এবছর বইপোকার মেধাবী পাঠকেরা কে কি পড়েছেন, তার তালিকা দিচ্ছিলেন। আমিও একটা তালিকা দিলুম। আমার পঠন মাফিক। প্রচুর খিল্লি শুরু হলো। এই হ্যা হ্যা ইমোজি যত পড়বে, ততই ব্রতীকবাবুর অনুরোধের বিরুদ্ধে আমার ঢাল পোক্ত হবে। সেই হেইল মেরী আর গোদার কেসটা থেকেই ছকে নিয়ে লেখা। তো, আজ সকালে দেখি, গ্রুপ থেকে পোস্টটা ডিলিট করে দিয়েছে। হেঃ, হেঃ, আর ঢাল লাগবেই না, কেননা ব্রতীকবাবু আর কোনোদিন এ’ প্রসঙ্গ তুলবেন না। দায় ফায় আর চাপাবেন না। আমি নয়, বইপোকা গ্রুপ তাঁর থোবড়ায় পুরো ইন্ট্যারলক্ সেলাই মেরে দিয়েছে। ধর্মের কল... কিসে নড়ে যেন। মাথার ওপর তারা মা; সে-ই জানে সময় কখন হবে, কালকে ধারণ করতে গিয়ে, প্রথম মহাবিদ্যার কষ্টটা কিন্তু নেহাত কম হয় না...
--------------------------------------------
লেখাটা এখানে রইলো। ভার্বাটিমঃ
❝একটা আতাক্যালানে বছর কাল শেষ হবে। সব বইপোকারা নিজের পড়াশোনার লিষ্টি দিচ্ছেন, এখানে অংশগ্রহণ না করাটা পাপ। আমার তালিকা রইলো। নীচে। হুবহু।
বই/ উপন্যাস
*****
১) 0000000 - 0000000 (প্রকাশক -?!)
২) 0000000 - 0000000 (প্রকাশক -?!)
৩) 0000000 - 0000000 (প্রকাশক -?!)
৪) ........... - ...........
৫) ........... - ...........
২৭) ......... - ........... (প্রকাশক - দেখিনি)
২৮) ......... - ............ (প্রকাশক - দেখিনি)
পুনশ্চঃ কিছু বই সেকেন্ড অনওয়ার্ডস হ্যান্ড। সামনের খানকয়েক পাতা ছিলো না, তবে বিষয়টুকু আনটাচড। যেজন্য প্রকাশকের নাম জানা যায়নি। কিছু বই ধরেই সটান পড়তে শুরু করেছি, ভূমিকা থাকলে, সেটুকু পড়ে নিয়ে। প্রকাশক, সংস্করণ, উৎসর্গ ফালানা ফালানার দিকে না তাকিয়েই।
পরে ভেবেছি, আটাশটা বই পড়েই থেমে গেলাম কেন। খান কয়েক না পড়া বই তো সামনেই পেখম মেলে ঘুরঘুর করছে। পড়বো বলে হাত বাড়াতে যাবো, এমনসময় কোন্ এক বিস্মৃতির অতল থেকে... কে যেন বেশ, তখন খুবই ছোট্টবেলা, শিখিয়েছিলো, ফলতঃ ক্ষীণ কন্ঠ এক, যে, পড়তে গেলেই কম করে আটাশটা বই। এটাই নিয়ম। তা নিয়ম কেন তৈরী হয়? - ধারণা যায়, একদিন ভাঙা হবে বলেই। সুতরাং ধ্যার বাল জ্ঞানে, যেটা পড়বো বলে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই এঁচে রেখে, চোখের এক্কেবারে সামনে, চোখের আলোয় বললেও বাড়িয়ে বলা, সম্ভবতঃ, হবে না, সেই কে ভাসালে নৌকাখানি'র দিকে হাত বাড়িয়েছি এইটা ভাবতে ভাবতে যে, এইটা প্রথমে পড়ে নিয়ে বাকীগুলো পড়া উচিত ছিলো, কেননা সব বইই তো এবছর, আমি, পুজোর ছুটিতে পড়েছি। এমন সময়, বউ এসে বললোঃ চ, মাল খাই। এক হাতে তার হান্ড্রেড পাইপার্স, অন্য হাতে সোডার বোতল। ও জলে খায়, আমি সোডা ছাড়া না। তা' মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় আর বউয়ের অনুরোধ, এ তো মাথায় তুলে রেখে দিতে হয়। মাল ফাল সব রেডি, এমনকি, নাকতলার আউধের (আয়ুধ?) ফ্র্যাঞ্চাইসি থেকে আনা গলৌটি কাবাবও। গ্লাসে হুইস্কি, সোডা মিশিয়ে, আইসকিউব ফেলে ইনডেক্স ফিঙ্গার দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘোলাচ্ছি, মানে, বাংলায় বললে স্টায়্যার করছি আর কি, মনে হলো, নিয়ম, বোধ করি, আমি ভেঙেইছি, হয়তঃ বা অজান্তে, কিংবা নয়, কিন্তু, আগে পড়া বইগুলোর কোনোটাকে নিয়ে আঁশ থেকে ছাল-বাকল ছাড়িয়ে, ভেঙে-চুরে যে ভেবেছি, সেটাও কি একপ্রকারের পড়া নয়?
... কি জানি।
এডিটঃ এইটা লিখে পড়া বইগুলো, আমি পড়া বই একদিকে রাখি, না পড়া বই বিপরীত দিকে; গুণতে গেলাম। গিয়ে দেখি, পুরোদস্তুর কাকেশ্বর কুচকুচের হিসেব। আটাশটা বই সেখানে নেই। গুণলে 'পর সংখ্যাটা ঊনিশ। সত্য সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ, দিনের বেলা গাঁড় ফাটা রোদ, রাতের বেলা মশায় মারে পোঁদ।❞
*হয়তঃ বা অজান্তে, কিংবা নয়, কিন্তু, - এটা যোগ হলো। এখন।
**গিয়ে দেখি এরপর একটা কমা দিলাম। - এটা যোগ হলো। এখন।
অনিন্দ্য ঘোষ ©
ছবি – এখানে চর্বি। ফলতঃ অপ্রয়োজনীয়।
ঋণঃ একটা নির্দিষ্ট
সময় পর (থাবগো ধরে সেটা যদিও বলা যায় না, এটা অনুভবের ব্যাপার এবং একটা সৎস্বীকারও প্রয়োজন) মৌলিক
বলে আর কিছুই নেই। সবই একে
অন্যের প্রভাবে আছে; ক্রস-কাটিং ইমপ্যাক্ট বললে বাড়িয়ে বলা, বোধহয়, হয় না। আর আমি তো, সজ্ঞানে বা অজান্তেই একপ্রকার, আমার বাক্যের শুরু, মাঝখান বা শেষে, বহু গায়ক / গায়িকার গানের অংশ, অনেকসময় কবিতার কোনো অংশ, কারোর গদ্যের কোনো অংশ, নামকরণ ইত্যাদি প্রভৃতি ব্যবহার করে ফেলি। এখানেও যদি করে থাকি, এবং করেই-তো-ছি বটেই; তো, সেইসব কবিদের, গদ্যকারদের আর গানের ক্ষেত্রে, গানের গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক / গায়িকা ও সেইসব গানের অংশভুক সকলকে।
No comments:
Post a Comment